
মধ্যপ্রাচ্য ও আরব আফ্রিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে গতকাল ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হলেও পিরামিড আর নীল নদের দেশ মিশরে মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়েছে দেশটিতে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে একদিন পর।
মিশরীয়রা দীর্ঘ ৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর আজ সোমবার (৩১ মার্চ) ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মসজিদ থেকে ধ্বনি আসতে থাকে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’।
ভোরের আলো ফোটার আগেই দেখা যায় নারী, পুরুষ ও শিশুরা হাতে জায়নামাজ নিয়ে ছুটে চলেছেন মসজিদের দিকে। ভোর ৬টা ১২ মিনিটে রাজধানী কায়রোসহ দেশটির সকল মসজিদ ও খোলা ময়দানে একযোগে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের জামাত। শাফি মাজহাবের দেশটিতে ইমাম সাহেব ১২ তাকবিরের মাধ্যমে দুই রাকাত সালাত আদায় করেন মুসুল্লিদের নিয়ে।

মিশরে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা নিজ নিজ এলাকায় মসজিদ ও মাঠে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন। দেশটিতে অধ্যায়নরত প্রায় ৪ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মাঝে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বিখ্যাত আল-আজহার ও ইমাম হোসাইন (রা.) মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন। এই দুটি মসজিদে ঈদের জামাতে শরিক হতে রাত তিনটা থেকে লাইন ধরে ঢুকতে দেখা যায় মুসুল্লিদের।
বিশ্বের প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরে ঈদুল ফিতরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো কুকিজ জাতীয় কাহক নামক অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি একটি বিস্কুট। ভেতরে খেজুর, ওয়ালনাট ও বিভিন্ন বাদাম ভরে মাখন, চিনি ও ময়দার সংমিশ্রণে তৈরি কাহক ছাড়া মিশরীয়দের ঘরে ঈদ উদযাপন চিন্তাই করা যায় না।

দেশটিতে ঈদুল ফিতরের প্রধান খাবার ফাসিখ/রিংগা (লবণাক্ত শুটকি মাছ), বাছাল আখদার (পেঁয়াজ পাতা) ও এইস বেলাদি (স্থানীয় রুটি)। গত দুই দিন যাবত রুটি বানানোর কারখানাগুলোতে দেখা যায় রুটি সংগ্রহের জন্য লম্বা লাইন।
এবারও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অনেক বন্দিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।