মালয়েশিয়ায় একটি কোম্পানিতে প্রায় ৩০০ বাংলাদেশি কর্মীর ৫ মাসের বকেয়া বেতনের বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে একটি নোটিশ জারি করেছে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন। এতে তাদেরকে আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কর্মীদের সমস্যা সমাধানে হাইকমিশন অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশি কর্মীদের ৫ মাসের বকেয়া বেতনের বিষয়ে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে এই নোটিশ জারি করা হয়। নোটিশটি সময় সংবাদের হাতে এসেছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, কাউয়াগুছি ম্যানুফ্যাকচারিং এসডিএন বিএইচডি কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের পক্ষ থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ হাইকমিশনে অভিযোগ করা হয়, কোম্পানিতে তাদের ৫ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।
এরপর হাইকমিশন তাৎক্ষণিকভাবে ওই কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর হাইকমিশন কোম্পানির প্রতিনিধি ও বাংলাদেশি কর্মীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করে।
সভায় কোম্পানির পক্ষ থেকে বকেয়া বেতন চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস শেষ হওয়ার আগে ধাপে ধাপে পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। বাংলাদেশি কর্মীরা কোম্পানির এই প্রতিশ্রুতিতে সম্মত হন এবং যথারীতি কাজে ফেরেন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সভার তিনদিন পর হাইকমিশনের কর্মকর্তা প্রথম সচিব (শ্রম) সুমন চন্দ্র দাশের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কোম্পানির অফিসে যায়। সেখানে কোম্পানির সভাকক্ষে প্রতিশ্রুত অর্থ তথা বকেয়া বেতনের প্রথম কিস্তি হস্তান্তর করা হয়।
নোটিশে আরও বলা হয়, কয়েকদিন আগে কর্মীদের পক্ষ থেকে হাইকমিশনে আবারও বকেয়া বেতন প্রাপ্তি সংক্রান্ত অভিযোগ আসে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোম্পানির প্রতিনিধিদের ফের হাইকমিশনে ডেকে সভা করা হয়।
সভায় কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের আর্থিক দূরাবস্থা, বিদেশি ক্রয়াদেশ বাতিলের প্রেক্ষিতে উৎপাদন বন্ধের বাস্তবতাসহ বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করেন। হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং কর্মীদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত বিষয়ে কোম্পানিকে নিশ্চিত করার বিষয়ে অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু কোম্পানি বকেয়া বেতন না দেয়ায় শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে কর্মীরা কর্মবিরতি ও কোম্পানির অফিস ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে হাইকমিশনারের নির্দেশে রাত ১১টার দিকে হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) সুমন চন্দ্র দাশের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কোম্পানিতে উপস্থিত হয়। পুলিশ বিভাগের সদস্য, কোম্পানির কর্মকর্তা ও বাংলাদেশি কর্মীদের সাথে আলোচনা করে অবরোধ প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেয়া হয়।
আলোচনার ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে পুনরায় পুলিশ, কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মীদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দীর্ঘ আলোচনায় সমস্যার সমাধান খোঁজা হয়। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ নিয়ে আগামী ১৮ ডিসেম্বর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এ কারণে সবাইকে সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।