বিসিবির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মত আছেন নাজমুল হাসান। বিসিবির এক শীর্ষ পরিচালককে তিনি দেশের বাইরে থেকে ফোনে এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। সরকার পরিবর্তনের পর নাজমুল হাসান লন্ডনে চলে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে বোর্ডের যে কয়জন পরিচালক সক্রিয় আছেন, গতকাল তাঁরা বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের করণীয় ঠিক করতে আলোচনায় বসেছিলেন। সেখানেই একজন পরিচালক সভার সবাইকে নাজমুল হাসানের এই ইচ্ছার কথা জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক পরিচালক এই প্রতিবেদককে আজ বলেছেন, বিসিবিতে সংস্কারের সুযোগ করে দিতে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে রাজি আছেন নাজমুল। তবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁকে লিখিতভাবে বোর্ডকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাতে হবে, যেটি পরে পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদন করতে হবে।
কিন্তু বোর্ড সভা ডাকতে হবে বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসানকেই, যেটি তিনি বিদেশে বসেও পারবেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সভা ডেকে সেখানে সভাপতিত্ব করার দায়িত্ব সভাপতি তাঁর অনুপস্থিতিতে অন্য কোনো পরিচালকের ওপর ন্যস্ত করতে পারেন। অথবা সভাপতির অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিতদের কারও প্রস্তাবে যেকোনো একজন পরিচালক সভাপতিত্ব করতে পারেন। বিসিবি সভাপতি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র পাঠালে এই সভা ডাকা হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।
গতকালের সভায় পরিচালকদের কেউ কেউ বলেছেন, বিসিবিতে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ থাকলেও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য রেখে তাঁরা কাজ করতে পারবেন না। কাজেই এ ব্যাপারে যেন সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেওয়া হয়। অক্টোবরে দেশে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করতেও সেটা প্রয়োজন। আবার কোনো কোনো পরিচালক মত দিয়েছেন, এখনই বোর্ডে রদবদল হলে সেটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বিশ্বকাপ আয়োজনে। সব পরিচালকের একযোগে পদত্যাগ ভুল বার্তা দিতে পারে আইসিসি ও ক্রিকেটবিশ্বকে। সে ক্ষেত্রে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন।
বাংলাদেশে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ পর্যন্ত হবে কি না, না হলে কোথায় হবে–এসব ব্যাপারে আইসিসি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ২০ আগস্ট।
গত ১১ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও সাত পরিচালক। ক্রীড়া উপদেষ্টা বিসিবি কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, বোর্ড পুনর্গঠনে আইসিসির নিয়মের মধ্যে থেকে কী করা যায়, সেটি দেখতে। সভার পর সংবাদমাধ্যমকেও তিনি বলেন, ‘বিসিবি আইসিসির অধীনে একটি ফেডারেশন। এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। যাঁরা বিসিবির পরিচালক আছেন, তাঁরা আইসিসির নিয়মের মধ্যে থেকে কীভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায়, সেটি দেখবেন। অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া যায় কি না, সেই বিষয়ে তাঁরা আমাদের পরবর্তী সময়ে জানাবেন।’
২০১২ সালে সরকার মনোনীত সভাপতি হিসেবে বিসিবির দায়িত্ব নিয়েছিলেন নাজমুল হাসান। ২০১৩ সালের অক্টোবরে হন নির্বাচিত সভাপতি। সেই থেকে নাজমুলই তিন মেয়াদে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।