
ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক সরকারি ছুটিতে বান্দরবানে আগাম হোটেল বুকিংয়ের হিড়িক পড়েছে। আগামী ২ থেকে ৫ এপ্রিল অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের ৮০-১০০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং নিয়ে রেখেছেন ভ্রমণ প্রত্যাশীরা। পাশাপাশি ঢাকা থেকে বান্দরবান অভিমুখী সব গণপরিবহনের আসনও আগাম বুকিং হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি রয়েছে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। ছুটির দিনগুলোতে যান্ত্রীকতা ভুলে পরিবার পরিজনের সঙ্গে প্রাকৃতিক পরিবেশে একান্তে কিছু সময় কাটাতে অপরুপা বান্দরবানে ভিড় জমাবেন প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণ পিপাসুরা। যার কারণে এরইমধ্যে ২-৫ এপ্রিল পর্যন্ত বান্দরবান জেলা শহরের অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং নিয়ে রেখেছেন ভ্রমণ প্রত্যাশীরা। পাশাপাশি ওই দিনগুলোতে ঢাকা থেকে বান্দরবান অভিমুখী যেসব নিয়মিত গণপরিবহন রয়েছে প্রায় সবগুলোর আসনও আগাম বুকিং হয়ে গেছে। আগামী ৩-৬ এপ্রিল বান্দরবান থেকে ঢাকাগামী পরিবহনগুলোও আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
হোটেল গার্ডেন সিটির মালিক মো. জাফর উল্লাহ জানান, ২ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত তার হোটেলের শতভাগ ও ৭-১০ এপ্রিল পর্যন্ত ৭০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগামী দিনগুলোতে বাকি কক্ষগুলোও শতভাগ বুকিং হয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।

হোটেল হিল ভিউয়ের ফ্রন্ট ডেক্স ম্যানেজার মো. তৌহিদ পারভেজ জানান, আগামী ২, ৩ ও ৪ এপ্রিল হোটেলের ৯০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং নিয়ে নিয়েছেন ভ্রমণপ্রতাশীরা। বুকিংয়ের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
হোটেল গ্র্যান্ড ভ্যালির ম্যানেজার মো. সুমন জানান, ২, ৩ ও ৪ এপ্রিলের জন্য তার হোটেলের ৮০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
হোটেল হিল্টনের ম্যানেজার আক্কাস উদ্দিন সিদ্দিকি জানান, এরমধ্যে ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৭৫ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকড হয়ে গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে।
শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার জাহেদুল ইসলাম বাপ্পা বলেন, ২, ৩ ও ৪ এপ্রিল ঢাকা থেকে বান্দরবানগামী এবং ৩, ৪, ৫ ও ৬ এপ্রিল বান্দরবান থেকে ঢাকাগামী বাসগুলোর সব সিট আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
সেন্টমার্টিন পরিবহনের ম্যানেজার আবিদুল ইসলাম বলেন, ২, ৩ ও ৪ ডাবল গাড়ি দিয়েও ঢাকা থেকে বান্দরবানগামী সব বাসের সিট আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
সৌদিয়া পরিবহনের ম্যানেজার মো. মোজাম্মেল বলেন, ২ ও ৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে বান্দরবানগামী এবং ৪, ৫ ও ৬ এপ্রিল বান্দরবান থেকে ঢাকাগামী পরিবহনের সব সিট আগাম বুকিং হয়ে গেছে।

ইম্পেরিয়াল পরিবহনের ম্যানেজার প্রান্ত দত্ত জানান, ২ এপ্রিল শতভাগ ও ৩ এপ্রিল অর্ধশত ভাগ ঢাকাগামী গাড়ির আসন আগাম বুকিং হলেও ৩, ৪, ৫ ও ৬ এপ্রিল বান্দরবান থেকে ঢাকাগামী তাদের সব গাড়ির আসন আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
বান্দরবানের ঢাকা পরিবহন সমিতির সভাপতি কামাল পাশা জানান, ২-৪ এপ্রিল ঢাকা থেকে বান্দরবান এবং ৩-৬ এপ্রিল বান্দরবান থেকে ঢাকাগামী সব পরিবহনের আসন আগাম বুকড হয়ে গেছে। যাত্রীদের চাহিদার ভিত্তিতে সুযোগ থাকলে পরিবহনের সংখ্যা বাড়াতে পারেন বলে জানান তিনি।
বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ছুটির কারণে পর্যটকদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন। এরইমধ্যে ২-৪ এপ্রিল জেলার অধিকাংশ কটেজগুলো শতভাগ ও আবাসিক হোটেলগুলোতে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। বাকি দিনগুলোতে অন্যগুলিও শতভাগ বুকিং পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। এছাড়া পর্যটকদের সার্বিক সেবা নিশ্চিত করতে হোটেল মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পেট্রোল দল বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে পোশাকে ও সাধারণ পোশাকে পুলিশ সদস্যরা কাজ করবে।