টালিগঞ্জের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মুনমুন সেনের স্বামী ভরত দেব ভার্মা মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। খবর হিন্দুস্তান টাইমস
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেছেন, ‘খবরটা শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। ভরত আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। মুনমুন বলেছিল, শরীরটা ভালো থাকে না ভরতের। চোখে নাকি ঠিক মতো দেখতে পাচ্ছিল না।’
ভরত রাজ পরিবারের ছেলে। মুনমুনের মা মহানায়িকা সুচিত্রা সেন নিজে সেই পরিবারের সঙ্গে কন্যার সম্বন্ধ করেছিলেন। খুব ধুমধাম হয়েছিল সেই বিয়েতে। বাংলা বিনোদন জগতের সকলেই প্রায় উপস্থিত ছিলেন। সুচিত্রা সেন নিজে গিয়ে বিয়ের কার্ড দিয়ে এসেছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমারের বাড়িতে। কেবল টলিউড নয়, মুনমুনের বিয়েতে এসেছিলেন বলিউড-তারকারাও।
ত্রিপুরার রাজ বংশের পুত্র ভরত স্বভাবগতভাবে ছিলেন ভীষণ প্রগতিশীল ব্যক্তি। দুরদর্শনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুনমুন জানিয়েছিলেন, ভরত চিরকাল তাকে সাপোর্ট করেছেন। স্বামীকে আদর করে ‘হাবি’ বলে ডাকতেন মুনমুন। বিয়ের পর মুনমুন সিনেমায় আর অভিনয় করবেন না, এমন শর্ত চাপিয়ে ছিলেন সুচিত্রা সেন। মায়ের অনুমতি ছাড়াই সিনেমার অফার গ্রহণ করেছিলেন মুনমুন। মায়ের গোঁসা হয়েছিল খুব। দেড় বছর কথাই বলেননি কন্যার সঙ্গে। সেই সময় ভরতই তাকে নতুন করে কাজ করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন। হাবির মধ্যে এক প্রকৃত বন্ধুকে খুঁজে পেয়েছিলেন মুনমুন।
কেবল ভালো স্বামী নন, ভরত ছিলেন আদর্শ পিতাও। দুই কন্যা রাইমা ও রিয়াকে বুকে আগলে মানুষ করেছেন তিনি। বাবা-ই ছিলেন তাদের পাওয়ার হাউজ।
রাইমা বলেছিলেন, ‘প্রতিবার পূজাটা মা-বাবার সঙ্গেই কাটাতে চেষ্টা করি। তারাই আমার সব।’ অন্যান্য অনেক সাক্ষাৎকারে দুই বোন বলেছিলেন, কীভাবে সারাজীবন ভরত তাদের আগলে রেখেছিলেন।