
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে হতাহত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মানবিক সংকটও চরমে পৌঁছেছে। বুধবার (২১ মে) ভোর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় অঞ্চলটিতে অন্তত ৯৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেডিকেল সূত্রগুলো।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, মধ্যরাতের পর থেকে দেইর আল-বালাহ শহরের একটি গুদামে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর চালানো বিমান হামলায় অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, নিহতের সংখ্যা ১০, যাদের বয়স ৭ থেকে ৫১ বছরের মধ্যে।
এদিকে, পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে বিদেশি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বুধবার ওই এলাকায় অভিযান চালানোর সময় এই ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং মানবিক ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
খাদ্য-চিকিৎসার অভাবে গাজাবাসী
জাতিসংঘের প্রধান মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজায় যে পরিমাণ ত্রাণ ঢুকছে, তা ‘ক্ষুধার্ত জনগণের প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল’।
চিকিৎসাসেবার অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। হাসপাতালগুলো কার্যত অচল। হৃদরোগ ও রক্তনালিজনিত অস্ত্রোপচারের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে গেছে। জরুরি সরঞ্জাম ও ওষুধের অভাবে অনেক অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা এখন পুরোনো যন্ত্রপাতি পুনর্ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
মেডিকেল ওয়্যারহাউজগুলোতে যা কিছু মজুত আছে, তা দিয়ে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ চলা সম্ভব বলে সতর্ক করেছেন তারা। এরপর দৈনিক কিছুসংখ্যক জীবনরক্ষাকারী অস্ত্রোপচার চালিয়ে যাওয়ার জন্য কঠোর বাছাইনীতি প্রণয়ন করতে হবে।
ইসরায়েলের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে চিকিৎসাসামগ্রী ঢুকতে না পারায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান চিকিৎসা কর্মীরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৬৫৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ২১ হাজার ৯৫০ জন। গাজা সরকারের মিডিয়া অফিসের মতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ, যাদের মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের যোগ করলে মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে।