ভারতীয় বাংলা সিনেমার বর্ষীয়ান অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।তবে শারীরিক অসুস্থতা নয়, অভিনয় করার মতো চরিত্র না থাকার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নিজের অভিনীত সিনেমা ‘জেকে ১৯৭১’-এর প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের জন্য ঢাকায় ‘ফেলুদা’খ্যাত এই অভিনেতা। সিনেমার প্রদর্শনীর পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন এ অভিনেতা। সেখানেই অবসর নেওয়ার বিষয়সহ নানা বিষয়ে কথা বলেন সব্যসাচী।
বিষয়টি নিয়ে জলঘোলাও কম হয়নি। এ প্রসঙ্গ আবারও সামনে আনতেই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, ওই সময়ে আমার বক্তব্যের ভুল ব্যখ্যা করা হয়। আমি বলেছিলাম, আর ফেলুদা করব না। কিন্তু লেখা হয়- ‘সব্যসাচী চক্রবর্তী আর অভিনয় করবেন না!’
এখন কি অবসর নিতে চাইছেন? এ প্রশ্নের উত্তরে সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, হ্যাঁ, এখন আমি অবসর গ্রহণ করতে চাইছি। কারণ আমার এখন আর করার মতো কোনো চরিত্র নেই।
ফেলুদার বাইরেও তো চরিত্র রয়েছে, নিশ্চয়ই প্রস্তাব পান? এমন প্রশ্নের জবাবে সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, আমাকে বলা হয়, ‘আপনি না থাকলে সিনেমাটা হবে না। ’ কী চরিত্র জিজ্ঞাসা করার পর বলে, ‘হিরোর বাবা। ’ দেখা যাবে, হয়তো তার আগের সিনেমাগুলোতেও একই চরিত্র এবং একই সংলাপ। আমার যুক্তি, নতুন কিছু না হলে আমি অভিনয় করব না।
১৯৫৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন সব্যসাচী। ১৯৭৫ সালে এইচএসসি পাস করেন। হংসরাজ কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে দিল্লিতে এএমআই পরীক্ষায় উত্তীর্ন হন। ১৯৮৬ সালে মিঠু চক্রবর্তীকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে গৌরব ও অর্জুন নামে দুই ছেলে রয়েছে।
১৯৯২ সালে অভিনয়ে নাম লেখান সব্যসাচী। ‘তেরো পার্বন’ টিভি সিরিয়ালের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। ‘রুদ্রসেনের ডায়েরি’ টিভি সিরিয়ালে প্রথম গোয়েন্দা চরিত্রে অভিনয় করেন। পরে বাঙালি গোয়েন্দা চরিত্রে তার সাবলীল অভিনয় মুগ্ধ করে দর্শকদের।
সব্যসাচীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে- সত্যজিৎ রায়ের ‘ফেলুদা’, সন্দীপ রায়ের ‘বাক্স রহস্য’। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘অন্তর্ধান’। এছাড়াও তার অভিনীত সিনেমা হলো- ‘কাকাবাবু হেরে গেলেন’, ‘তিনকাহন’, ‘হেমলক সোসাইটি’, ‘থানা থেকে আসছি’, ‘রয়েল বেঙ্গল রহস্য’, ‘ল্যাবরেটরি’, ‘গোরস্থানে সাবধান’, ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ প্রভৃতি।