খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সদর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে ধর্ষণ এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা। মামলার পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, এই ঘটনায় সদর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, অপরটি পুলিশের ওপর হামলার মামলা। ধর্ষণ মামলাটি করেছেন ঘটনার শিকার ছাত্রীর মা। অপর মামলার বাদী পুলিশ।
এদিকে আজ সকাল থেকে খাগড়াছড়ি শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সকালে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে অল্প কিছু যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে পানছড়ি-খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল করেনি। ১৪৪ ধারা বহাল থাকায় শহরের রাস্তায় লোকজনের উপস্থিতি কম ছিল। রাতভর আতঙ্কে ছিলেন শহরের অনেক এলাকার বাসিন্দা।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, খাগড়াছড়ির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৪৪ ধারা এখনো বহাল রয়েছে। সকালে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানপাট পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’
গতকাল মঙ্গলবার এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে (৪৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে খাগড়াছড়ি শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এ সময় সদরের মহাজনপাড়া, পানখাইয়াপাড়া সড়কের চাইহ্লাউ পাড়ার কয়েকটি দোকান ও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভাঙচুর করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, নিহত সোহেল রানা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি সদরের খেজুরবাগান এলাকায় অবস্থিত। ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সোহেল রানা কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। একই প্রতিষ্ঠানে তিনি যেন আবার যোগদান করতে না পারেন, সেই দাবি তুলে শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি বিক্ষোভ করেছিল। এরপর গতকাল আবার তাঁর বিরুদ্ধে অপর এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, নিহত শিক্ষকের লাশ খাগড়াছড়ি সরকারি সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। লাশ নেওয়ার জন্য এখনো পরিবারের কেউ আসেনি। সোহেল রানার বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর সদর এলাকায়।
আজ সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে বলেও জানান তিনি।