ভিয়েতনামে টাইফুন ইয়াগির আঘাত এবং এর কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩ জন হয়েছে। আহত হয়েছেন ৮০০ জনেরও বেশি। এখনো নিখোঁজ ১০৩ জন।
রাজধানী হ্যানয়ে রেড নদীতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে রাজধানীর পার্শ্ববর্তী অনেক এলাকা এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে স্বস্তি ফিরতে আরও কয়েক দিন লাগবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
টাইফুন ইয়াগি গত শনিবার ভিয়েতনামে আঘাত হানে। এর ফলে এক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা বৃষ্টির কারণে ভিয়েতনামের পার্বত্য উত্তরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
দেশটির লাও কাই প্রদেশে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার আকস্মিক বন্যায় প্রদেশটির লাং নু গ্রাম পুরো তলিয়ে গেছে।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ভিএনএক্সপ্রেস সংবাদপত্র জানায়, লাং নু থেকে ৪৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে আরও ৩৯ জন নিখোঁজ রয়েছে। গ্রামটিতে সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধারকাজ চালাতে ভারী সরঞ্জাম আনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
প্রায় ৫০০ উদ্ধারকর্মী শনাক্তকারী কুকুর (স্নিফার ডগ) দিয়ে গ্রামটিতে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন বলেন, নিখোঁজদের সন্ধানে তাঁরা পিছপা হবেন না।
টাইফুন ইয়াগিতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অস্ট্রেলিয়া ২০ লাখ ডলার সহায়তার অংশ হিসেবে মানবিক ত্রাণ সরবরাহ শুরু করেছে। দক্ষিণ কোরিয়াও ২০ লাখ ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা ইউএসএআইডির মাধ্যমে ১০ লাখ ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিয়েতনামে গত কয়েক দশকে যেসব টাইফুন আঘাত হেনেছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ইয়াগি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বাড়তে থাকায় টাইফুন ইয়াগির মতো ঝড় আরও শক্তিশালী হচ্ছে। এসব টাইফুনের প্রভাবে তীব্র বাতাস ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।