বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। শুধু চলচ্চিত্রেই নয়, টিভি পর্দায়ও সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। এ ছাড়া একাধারে তিনি নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা ও গল্পকার হিসেবেও ছিলেন সমাদৃত। গুণী এই অভিনেতা ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সবাইকে কাঁদিয়ে পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। আজ অভিনয়ের এই জাদুকরের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে এবার তিনি পা রাখতেন ৮৫ বছরে।
মৃত্যুর আগের কয়েক বছর ধরে অসুস্থ হয়ে নিভৃত জীবনযাপন করেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান। কয়েক দফায় তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।
চলচ্চিত্রে এ টি এম শামসুজ্জামানের সম্পৃক্ততা ঘটে উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘বিশকন্যা’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে। সে সময় চিত্রনাট্য লেখাতেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রায় শতাধিক চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন এ টি এম।
প্রথমদিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করলেও ১৯৬৫ সালে ভিন্ন ধারার অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে আগমন তার। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। সে ধারাবাহিকতায় একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এই কিংবদন্তি। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন কোটি দর্শকের ভালোবাসা আর পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে এ টি এম শামসুজ্জামান অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেÑ‘লাঠিয়াল’, ‘নয়নমণি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘অশিক্ষিত’, ‘সূর্যদীঘল বাড়ি’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘লাল কাজল’, ‘পুরস্কার’, ‘দায়ী কে?’, ‘দোলনা’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘অজান্তে’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘চুড়িওয়ালা’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘শাস্তি’, ‘মোল্লাবাড়ির বউ’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘চাঁদের মতো বউ’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘এবাদত’, ‘পরান যায় জ্বলিয়ারে’, ‘কুসুম কুসুম প্রেম’, ‘গেরিলা’, ‘লাল টিপ’, ‘চোরাবালি’, ‘পাংকু জামাই’।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য টিভি নাটক হচ্ছে-‘রঙের মানুষ’, ‘ভবের হাট’, ‘ঘর কুটুম’, ‘বউ চুরি’, ‘নোয়াশাল’, ‘শতবর্ষে দাদাজান’।
নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করা এ টি এম শামসুজ্জামানের পরিচালিত একমাত্র সিনেমা ‘এবাদত’। এখানে তিনি রিয়াজ-শাবনূরকে জুটি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।