জাতিসংঘের প্রতিবেদনই চূড়ান্ত, কারোর বানানো বয়ান এখন আর কেউ শুনবে না ড. ইউনূসের স্পষ্ট বার্তা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন হলো আমাদের প্রতি বিদেশীদের আর একটা সমর্থন। এখন কারোর বানানো বয়ান আর কেউ শুনবে না, ওইটা চূড়ান্ত। আর কত সমর্থন চাই আমরা, একেবারে অক্ষরে অক্ষরে তারা বলে দিয়েছে কাকে কোথায় মারা হয়েছে। এর থেকে বের হওয়ার তো কারোর উপায় নেই। বাংলাদেশকে ঘিরে যে অপপ্রচার চলছিল,এই প্রতিবেদন তা বন্ধ করে দিয়েছে। 

সরকারের প্রথম ছয় মাসের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যারা আমাদেরকে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে, তাদেরকে ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি। দ্বিতীয় পর্বেও এই হাঙ্গামা হবে। যাদেরকে বাংলাদেশের মানুষ তাড়িয়ে দিয়েছে, অস্বীকার করেছে ও ত্যাগ করেছে, তারা ফিরে আসার জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল। সেজন্য আমাদের শক্ত থাকতে হবে, মজবুত থাকতে হবে। একত্রে থাকতে হবে।  

শনিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এসব কথা বলেন। 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আজ প্রথম সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা সভাপতিত্ব করেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যের শুরুতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত যোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রথম পর্বের একটা অভিজ্ঞতা হলো, সরকার দেশের জনগণের ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমর্থন দুটোই পেয়েছে। পৃথিবীজুড়ে আমাদের প্রতি বড় রকমের সমর্থন গড়ে উঠেছে। যে কারণে অপরপক্ষ (ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী সরকার) সুবিধা করতে পারছে না, বহু গল্প করার চেষ্টা করছে, কিন্তু কোনো গল্প টিকাতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে গিয়েও গল্প চালাতে পারল না। ছোট রাষ্ট্র, বড়, মাঝারি এবং ধনী সব রাষ্ট্র আমাদেরকে সমর্থন করছে। কারোর কোনো রকম দ্বিধা নেই।

স্বৈরাচারী সরকারের গোপন বন্দিশালা ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ড, ইউনূস আরও বলেন, মানুষ কতটা নির্মম হতে পারে, নৃশংস হতে পারে, এর চেয়ে বড় নমুনা মনে হয় আর পাওয়া যাবে না। আমাদের দেখতে কষ্ট লেগেছে, কিন্তু যারা এখানে বছরের পর বছর কাটিয়েছে, তাদের প্রতিটি বর্ণনা ও অভিজ্ঞতা গুম কমিশনের রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিজ্ঞা করি আমরা যেন গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই। যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে, তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে, তাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করার জন্য আমরা সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করবো, তাদের সে স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।

  • Related Posts

    সবার সঙ্গে কথা বলেই মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্ত: প্রেস সচিব

    সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই মানবিক করিডোরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘মানবিক করিডোরে আমরা ইচ্ছুক যদি ইউএন চিন্তাভাবনা করে। পুরো জিনিসটা হবে…

    Continue reading
    হামলাকারীরা এখনো কাশ্মীরেই, দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের!

    কাশ্মীরের পহেলগামে হামলাকারীরা এখনও পালায়নি, তারা বহাল তবিয়তে দক্ষিণ কাশ্মীরেই লুকিয়ে আছে। এমনই দাবি করেছে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) সংশ্লিষ্ট সূত্র, যারা কেন্দ্রীয় সন্ত্রাসবিরোধী আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে কাজ…

    Continue reading

    সবার সঙ্গে কথা বলেই মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্ত: প্রেস সচিব

    সবার সঙ্গে কথা বলেই মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্ত: প্রেস সচিব

    হামলাকারীরা এখনো কাশ্মীরেই, দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের!

    হামলাকারীরা এখনো কাশ্মীরেই, দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের!

    পটুয়াখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত, আহত ৪

    পটুয়াখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত, আহত ৪

    হায়দরাবাদের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেয়েছে গুজরাট

    হায়দরাবাদের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেয়েছে গুজরাট