বাংলাদেশকে ছাড়াই শুরু হলো ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে সল্টলেকের করুণাময়ী বইমেলা প্রাঙ্গণে এই মেলার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. ফিলিপ আকারমান, গ্যোটে ইন্সটিটিউট দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অধিকর্তা ড. মার্লা স্টুকেনবার্গ, বিশিষ্ট সাহিত্যিক আবুল বাশার, বইমেলার আয়োজক কমিটি বুক সেলার অ্যান্ড গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুজিত বসু, স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরী, শুভা প্রসন্ন প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা সবার সেরা। এটি আমাদের গর্ব। আমরা বইমেলাকে ভালোবাসি। হৃদয়ের সঙ্গে এই মেলার একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে সাম্প্রতিক টানাপোড়নের কারণে এই প্রথম কলকাতা বইমেলায় অনুপস্থিত থাকছে বাংলাদেশি প্যাভিলিয়ন। ফলে এ বছর বাংলাদেশি লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের লেখা মিস করবেন কলকাতার বইপ্রেমী মানুষেরা।
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্রডে সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে বলেন, খুব কষ্ট হয় আমাদের। বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ বইমেলায় অংশগ্রহণ করেছে। জিও পলিটিক্সের সিস্টেমে তারা এবার এখানে আসতে পারেননি। আমরা এপারের মানুষ, ওপারে বহু মানুষের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। বহু প্রকাশকের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু আজ তারা আসতে পারেননি, এটি আমাদের কাছে খুব কষ্টের।
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নির্বেদ রায় বলেন, প্রতিবার যা হয়, এবার হয়তো সেটি করা সম্ভব হয়নি বলে আমার মনে হয়। তিনি আরও বলেন, কলকাতায় বাংলাদেশি কবি-সাহিত্যিকদের চাহিদা রয়েছে। আমরা মনে করতাম, দুই বাংলা নয়, বাংলা একটাই। আর বইমেলা হচ্ছে তারই একটা অংশ।
কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশের প্যাভিলিয়ন যে স্থানে হতো, সেখানে এবার দেখা যাচ্ছে আর্জেন্টিনা ও পেরুর প্যাভিলিয়ন।
এবারের বইমেলার প্রবেশদ্বারগুলোর একাধিক নামকরণ করা হয়েছে- সলিল চৌধুরী-ঋত্বিক ঘটক গেট, গ্যোয়েটে গেট, ম্যাক্সমুলার গেট, জার্মান স্থাপত্যের অনুকরণে দুটি গেট, বিশ্ববাংলা গেট এবং জীবনানন্দ-নজরুল গেট।
মেলায় সরণির নামকরণ হয়েছে বিশিষ্ট জার্মান ব্যক্তিবর্গ, যেমন- রিলকে, ব্রেকট, কাফকা, মুলার এবং অন্যান্যদের নামে। রয়েছে ভারতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাহিত্যিকদের নামও। এবারের মেলায় সম্মাননা জ্ঞাপন করা হবে সাহিত্যিক জয় গোস্বামী, প্রকাশক রঞ্জন সরকার এবং পাঠক সত্যব্রত ঘোষালকে।
মেলায় এই প্রথম মাসকট হিসেবে থাকছে দুটি হাঁস- হাসো ও হাসি। মেলায় আগত সবাইকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত তারা। বই কিনলে লটারি জেতার সুযোগও থাকছে এ বছর। ১৫ জন ভাগ্যবান বিজেতা প্রতিদিন পাবেন হাজার রুপির বুক গিফট কুপন।
আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিন ধরে চলবে এই বইমেলা। দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলার প্রবেশদ্বার খোলা থাকবে।