মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক মেলাকা প্রদেশে প্রথমবারের মত আয়োজন করা হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক হালাল ফেস্টিভাল ২০২৪’। মেলাকা প্রাদেশিক সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মেলাকা ইসলামিক রিলিজিয়ন কাউন্সিল (এমএআইএম) প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে বরাদ্দ করা বুথে বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরণের খাদ্য ও পানীয় ও ভোগ্যপণ্য নিয়ে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান ‘মৈত্রী’ এই মেলায় অংশগ্রহণ করে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) মেলার উদ্বোধন করেন মেলাকা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএবি দাতুক সেরি উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকদের বিশেষ আমন্ত্রণে যোগ দেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মেলাকার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইবি দাতুক সুলাইমান মোহাম্মদ আলী, প্রাদেশিক আইনসভার স্পিকার ওয়াইবি দাতুক ওয়াইরা ইব্রাহিম দুরুম, শিক্ষা ও ধর্ম বিষয়ক প্রাদেশিক এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ওয়াইবি দাতুক সেরি উতামা রহমান বিন মারিমান এবং মেলাকা প্রাদেশিক সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অন্যান্য স্টলের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্টল পরিদর্শন করেন উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ। এ সময় হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তাকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশের রফতানিযোগ্য বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে তাকে অবহিত করে হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে তার সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ ও প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রেহানা পারভীন এবং অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
এ মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশেও বাংলাদেশি পণ্যের বাজার তৈরি করা সম্ভব হবে বলে জানান মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মো. শামীম আহসান।
হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান জানান, হালাল পণ্যের বাণিজ্য একটি ক্রমবর্ধমান সেক্টর। সাম্প্রতিক সময়ে হালাল পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হালাল বাণিজ্যের পরিমাণও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও হালাল পণ্য বাণিজ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। মালয়েশিয়া হালাল বাণিজ্যে বিগত ১০ বছর ধরে শীর্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে।
শামীম আহসান আরও জানান, বাংলাদেশের হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরের সঙ্গে হাইকমিশন কাজ করছে। এছাড়াও বাংলাদেশে যৌথ প্রচেষ্টা/প্রকল্প গ্রহণপূর্বক হালাল করিডোর/হালাল হাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈশ্বিক হালাল অর্থনীতির সুযোগ গ্রহণের জন্য জন্য মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে হাইকমিশন বাংলাদেশের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণসহ অন্যান্য পরিকল্পনা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন পণ্যসাসামগ্রী নিয়ে অংশগ্রহণ করার জন্য অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ‘মৈত্রী’ কে ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান যাতে এই ধরণের মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে হাইকমিশনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন।
মালয়েশিয়া তথা আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য ও সেবাকে পরিচিত করার লক্ষ্যে হাইকমিশন নিয়মিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করে আসছে এবং ২০২৪ সালে ১০টি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।