দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের একটি দৃষ্টান্তই স্থাপন করলো চীন। ঘুস নেওয়ার অপরাধে দেশের অন্যতম সেরা ফুটবল কিংবদন্তিকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিলো দেশটির আদালত। খেলাধুলা বিভাগে অদূর ভবিষ্যতে কেউ যেন আর দুর্নীতিতে না জড়ান, তাদের জন্য সতর্কবার্তাও দিলো চীন।
এক দশক আগে চীনের ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের বড় বড় খাতগুলোর দুর্নীতি উদঘাটনে কাজ শুরু করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।তারই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে খেলাধুলা বিভাগে তদন্ত শুরু করে তার সরকার।
এরপরই ধরা পড়ে লি টাইয়ের দুর্নীতি। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব এভারটন ও শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা সাবেক এই তারকাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। নিজের দোষ স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।
লি টাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ম্যাচ ফিক্সিং ও ঘুস নিয়েছেন। এমনকি কোচিংয়ের চাকরি পেতে ঘুসের প্রস্তাব দেওয়ার প্রমাণও মিলেছে তার বিরুদ্ধে।
২০১৬ থেকে ২০১৭ সালে চীনের জাতীয় ফুটবল দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন লি টাই। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাকে হেড কোচের দায়িত্ব দেয় দেশটির ফুটবল ফেডারেশন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে হেড কোচের অব্যাহতি নেওয়ার পরই তার বিরুদ্ধে ওঠে দুর্নীতির অভিযোগ।
অভিযোগে বলা হয়, গত মার্চে ১ কোটি ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা) বেশি ঘুস নিয়েছেন লি টাই। দেশটির ব্রডকাস্ট মিডিয়া সিসিটিভি বলেছে, বাদ পড়া ফুটবলারদের জাতীয় দলে ফেরানো ও ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি করিয়ে দেওয়ার নামে এসব অর্থ নিয়েছেন তিনি। নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকারও করেছেন জাতীয় দলের জার্সিতে ৯২ ম্যাচ খেলা এই মিডফিল্ডার।
লি টাই বলেন, ‘আমি খুবই দুঃখিত। আমার উচিত ছিল সতর্ক থাকা এবং সঠিক পথ অনুসরণ করা। কিছু কিছু বিষয় সে সময় ফুটবলে বেশ প্রচলিত ছিল।’
শুধু লি টাই একাই নন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত হওয়ায় এই সপ্তাহে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকেও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গেল বুধবার সিএফএ-এর সাবেক সেক্রেটারি লিও ইউইকে ১১ বছরের কারাদণ্ড ও ৩৬ লাখ ইউয়ান (স্থানীয় মুদ্রা) জরিমানা করেছেন আদালত।
একইদিনে সিএফএ-এর রেফারি ম্যানেজমেন্ট দপ্তরে সাবেক প্রধান টান হাইকে সাড়ে ৬ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ ইউয়ান জরিমানাক করেছেন আদালত। আগের দিন মঙ্গলবার স্ট্রাট্যাজিক প্লানিংয়ের সাবেক প্রধান কুই জুনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ৬ লাখ ইউয়ান অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।