আগামী ৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। তাঁর সম্মানে দিনটিতে দেশজুড়ে পালন করা হবে জাতীয় শোক।
জিমি কার্টারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান হবে ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ক্যাথেড্রালে। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গত রোববার জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্লেইনসে নিজ বাড়িতে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন কার্টার। তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। গত অক্টোবর মাসে তিনি নিজের শততম জন্মদিন উদ্যাপন করেছিলেন। জিমি কার্টার ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী শনিবার কার্টারের সম্মানে ছয় দিনের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান শুরু হবে। এ সময়ে কার্টারের মরদেহ মোটর শোভাযাত্রা করে তাঁর নিজ শহর জর্জিয়ার প্লেইনস থেকে আটলান্টায় নিয়ে যাওয়া হবে। পথে যে খামারে কার্টারের শৈশব কেটেছে, সেখানে শোভাযাত্রা থামবে। সেখানে ‘ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস’ ঐতিহাসিক ফার্ম বেলটি ৩৯ বার বাজাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন কার্টার।
আটলান্টায় কার্টার প্রেসিডেনশিয়াল সেন্টারে ৭ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত কার্টারের মরদেহ বিশ্রামে রাখা হবে। এরপর আকাশপথে ওয়াশিংটন ডিসি নিয়ে যাওয়া হবে।
কার্টার প্রেসিডেনশিয়াল সেন্টারে মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষদের ফুল আনার পরিবর্তে অর্থ দান করার অনুরোধ জানিয়েছে কার্টারের পরিবার। এ অর্থ বিশ্বজুড়ে শান্তি, স্বাস্থ্য ও মানবাধিকারের সুরক্ষায় ব্যয় করা হবে।
৯ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ক্যাথেড্রালে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান হবে। সেদিন রাষ্ট্রীয় আয়োজন শেষে কার্টারের মরদেহ আকাশপথে জর্জিয়া ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাঁর পরিবার ছোট একটি পারিবারিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করবে। এরপর প্লেইনসে স্ত্রী রোসালিন কার্টারের সমাধির পাশে সমাহিত করা হবে কার্টারকে।
ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে নির্বাচিত জিমি কার্টার ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকটের মধ্যেই তাঁকে কাজ করতে হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিমি কার্টারের দায়িত্ব পালন তাই খুব একটা সুখকর ছিল না। অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও কূটনৈতিক সংকট সামলাতে না পেরে এক মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেননি তিনি।
পরে মানবিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নিজের হারানো সুনাম পুনরুদ্ধার করেন জিমি কার্টার, যার স্বীকৃতি পান ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়ে।