
বিশ্বের দুই শীর্ষ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ যেন থামছেই না। প্রতিদিনই এই যুদ্ধ নতুন মোড় নিচ্ছে। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে। ওয়াশিংটন শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে বেইজিংও পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছে।
একই সঙ্গে চলছে বাগযদ্ধও। রোববার (১৩ এপ্রিল) আরও একবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে সতর্ক করল শি জিন পিংয়ের সরকার। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, দুই-একটি পণ্যে নয়, যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের নতুন শুল্কনীতি থেকে পুরোপুরি সরে আসতে হবে। বাড়তি শুল্ক ‘সম্পূর্ণরূপে বাতিল’ করতে হবে।
গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে একে অপরের ওপর উচ্চমাত্রার শুল্ক আরোপ করে যাচ্ছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তবে শনিবার (১২ এপ্রিল) মার্কিন প্রশাসন জানায়, এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে না স্মার্টফোন, কম্পিউটার, সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল কিংবা মেমোরি কার্ডের মতো ইলেকট্রনিক পণ্যে।
তবে চীন মনে করে, শুধু স্মার্টফোন ও কম্পিউটার নয়, পারস্পরিক শুল্কের ভুল অনুশীলন সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। রোববার দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ভুল সংশোধনের জন্য একটি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে স্বাগত জানাই।’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক ছাড়ের যে ঘোষণা করেছে, তা মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
সেই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপিয়ে দেয়া শুল্কযুদ্ধে চীন যে পিছু হটবে না, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছে বেইজিং। চীনের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান জানান, তার দেশ বসে থাকবে না। চীনের নাগরিকদের বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে দেবে না শি জিনপিং প্রশাসন।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় নেয়ার পর থেকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানির দিকে। দু’দেশের শুল্ক সংঘাতের আবহে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকেই চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক চাপা ওয়াশিংটন।
এরপর চলতি মাসের শুরুর দিকে বিশ্বের বহু দেশের পাশাপাশি চীনা পণ্যের ওপর আরও একবার ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপান ট্রাম্প। চীন পাল্টা শুল্ক চাপালে ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দেন এবং মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৪ শতাংশ। তার সঙ্গে পূর্বের ২০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত করলে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে।
এরপরও থামেননি ট্রাম্প। আরও এক দফায় শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেন। গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সেই শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়। পরদিন শুক্রবার (১১ এপ্রিল) শুল্ক বৃদ্ধি করে পাল্টা জবাব দেয় বেইজিংও। দেশটির কর্মকর্তারা ঘোষণা করেন, ৮৪ নয়, এবার থেকে মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে।