উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার বিভিন্ন আটককেন্দ্রে বন্দি থাকা ১৫৪ জন অনিয়মিত অভিবাসী জাতিসংঘের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন কর্মসূচির আওতায় ঢাকায় ফিরেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সহায়তায় ১৫৪ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি অভিবাসীকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট অভিবাসীরা রাজধানী ত্রিপোলি ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টার বা আটককেন্দ্রে মানবেতর অবস্থায় ছিলেন।
অভিবাসীদের নিয়ে বুরাক এয়ারের চার্টার ফ্লাইটটি ২০ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
ওই সময় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর পক্ষ থেকে লিবিয়া থেকে আসা প্রত্যেক বাংলাদেশিকে নগদ ছয় হাজার টাকা, কিছু খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়। এছাড়া চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনে ব্যবস্থা করার নিশ্চয়তা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসন হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের বিমানবন্দরে অবতরণের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।
চলতি বছরের শুরু থেকেই লিবিয়ায় আটকেপড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া জোরদার করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এবং জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা।
অনেক অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইতালিসহ ইউরোপের দেশগুলোতে পৌঁছাতে লিবিয়াকে ট্রানজিট দেশ হিসেবে ব্যবহার করে। যাদের মধ্যে নিয়মিত সমুদ্রে নিখোঁজ হয় বিপুল সংখ্যক।
ভূমধ্যসাগরের লিবিয়া উপকূল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সলিল সমাধি এবং ভয়ঙ্কর অভিবাসন রুট হিসেবে পরিচিত।
২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে বিশৃঙ্খলায় আছে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া। লিবিয়ায় অনেক গোপন কারাগার রয়েছে। দেশটির মিলিশিয়ারা অভিবাসনকে অর্থ উপার্জনের উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে কারাগারগুলোকে ব্যবহার করে।
বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী অভিবাসীদের রাস্তা, অ্যাপার্টমেন্টে ও কর্মস্থল থেকে অপহরণ করে বন্দি করে রাখতে দ্বিধা করে না। আটকের পর তারা অভিবাসীদের নির্যাতনের ছবি তুলে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে থাকে। এর মধ্য দিয়ে মুক্তিপণ আদায় করেন।