ভিনিসিউস জুনিয়র মাঠে জাদু দেখান। বল পায়ে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করেন তিনি। কিন্তু মাঠে আচরণের বেলায়? ভিনিসিউস হয়ত ডাহা ফেল করবেন। মাঠে নিয়মিতই মেজাজ হারিয়ে দলকে ভোগান্তিতে ফেলছেন এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। গতকাল রাতেও মেস্তায়ায় ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে যখন তার দল রিয়াল মাদ্রিদ পিছিয়ে, ঠিক তখন মেজাজ হারিয়ে লালকার্ড দেখেছেন ভিনিসিউস জুনিয়র। শেষ পর্যন্ত ১০জনের দল নিয়েও রিয়াল ম্যাচটা জিতলেও বড় শাস্তির শঙ্কায় তিনি। রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি অবশ্য এই লালকার্ডকে অন্যায্য সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন।
গতকাল শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) মেস্তায়ায় ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই ম্যাচে রিয়ালের উইঙ্গার ভিনিসিউস প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে বিরামহীনভাবে ত্রাস ছড়িয়ে গেছেন। তাকে থামাতে একের পর এক ফাউল করে গেছে কার্লোস করবিনের দল। ৭৬ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়ার ডি-বক্সে পড়ে যান। ফলে তিনি পেনাল্টির আবেদন করেন।
সেই মুহূর্তে, স্বাগতিক দলের গোলরক্ষক দিমিত্রিয়েভস্কি, যিনি ইতোমধ্যে একটি হলুদ কার্ড পেয়েছিলেন, পেনাল্টির দাবি করা ভিনিসিয়াসের পেছনে এসে দাঁড়ান। দিমিত্রিয়েভস্কি যতদূরসম্ভব ব্রাজিলিয়ানের পিঠে স্পর্শ করেছিলেন এবং হয়তো তার চুল হালকাভাবে টান দিয়েছিলেন। জবাবে আবেগপ্রবণভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ভিনিসিয়াস দিমিত্রিয়েভস্কিকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ভুলবশত মেসিডোনিয়ান গোলরক্ষকের ঘাড়ে আঘাত লেগে যায়।
রেফারি সোতো গ্রাদো রিভিউ দেখে রিয়ালের এই উইঙ্গারকে সরাসরি লাল কার্ড দেখান। যা লা লিগায় রিয়ালের এই তারকার সরাসরি দেখা প্রথম লাল কার্ড। লাল কার্ডের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি ভিনিসিউস। তিনি মাঠ ছাড়তে অপারগতা প্রকাশ করে রেফারির দিকে তেড়ে আসার চেষ্টা করেন। তার সতীর্থ অ্যান্টনি রুডিগার এবং দানি সেবায়োস তাকে নিবৃত্ত করে মাঠের বাইরে পাঠান।
এই ঘটনায় বড় নিষেধাজ্ঞা নেমে আসতে পারে ভিনিসিউসের ওপর। দুই থেকে চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারেন তিনি। তবে নিষেধাজ্ঞার মাত্রা নির্ভর করছে রেফারির আনুষ্ঠানিক ম্যাচ রিপোর্টের ওপর। যদি এই ঘটনা আরএফইএফ’র ডিসিপ্লিনারি কোডের ১০৩ আর্টিকেলের পরিপন্থী হয়, এই নিষেধাজ্ঞা ৪ ম্যাচের হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনি দেপোর্তিভো মিনেইরার বিপক্ষে কোপা দেল রে’র ম্যাচ, স্প্যানিশ সুপার কাপে মায়োর্কার বিপক্ষে সেমিফাইনালের দুই ম্যাচ এবং কোপা দেল রে’র পরবর্তী রাউন্ড মিস করবেন।
রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি অবশ্য এই লালকার্ড মেনে নিতে পারছেন না। তার মতে, এই ঘটনায় ভিনিসিউস এবং ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক উভয়কেই হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করা উচিত ছিল। এই লাল কার্ড তুলে নেয়ার আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটায় ভিনিসিউস জুনিয়রকে লাল কার্ড দেখানোর মতো ছিল না এবং আমরা আবেদন করব। গোলরক্ষক তাকে ধাক্কা দিয়েছে এবং ভিনি তাতে সাড়া দিয়েছে। এটায় উভয়েরই হলুদ কার্ড দেখা উচিত ছিল এবং ব্যাপারটা সেখানেই থামা উচিত ছিল।’
তবে সাবেক আন্তর্জাতিক রেফারি ইতুরালদে গঞ্জালেস এটিকেই লাল কার্ডই মনে করেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘এটি লাল কার্ড কারণ তিনি তার মুখে আঘাত করেছেন। বুকে ধাক্কা দিলে হলুদ কার্ড হতে পারে, যদি না এটি ঘুষি হয়, তবে নিয়ম অনুযায়ী মুখ স্পর্শযোগ্য নয়।’
এখন দেখার বিষয় ভিনিসিউসকে কয় ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।