যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ঘূর্ণিঝড় ফ্রান্সিন আঘাত হেনেছে। এর প্রভাবে ভয়াবহ বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পূর্বাভাসদাতারা। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অঙ্গরাজ্যটির বাসিন্দারা জরুরি ভিত্তিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং প্রয়োজনীয় পণ্য মজুত করতে শুরু করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস কেন্দ্রের (এনএইচসি) তথ্য অনুসারে, স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে লুইজিয়ানার দক্ষিণ প্রান্তে ফ্রান্সিন আঘাত হানে। স্থলভাগে আঘাত হানার সময় এটি ক্যাটাগরি-২ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ মাইল (১৫৫ কিলোমিটার)।
এনএইচসির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ফ্রান্সিনের কারণে লুইজিয়ানার কিছু জায়গায় ১২ ইঞ্চি পরিমাণ বৃষ্টিপাত এবং ১০ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সংস্থাটি বলছে, ‘দক্ষিণ লুইজিয়ানাজুড়ে ভারী বৃষ্টি ও হারিকেন সৃষ্ট বাতাস ছড়িয়ে পড়েছে। এখন ঘরে থাকার এবং জানালা থেকে দূরে থাকার সময়।’
উপকূলীয় গ্রাম ডুলাকসহ অঙ্গরাজ্যটির উপকূলীয় কিছু শহরে বুধবার বিকেলে বন্যা, বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া ছিল। হাউমা শহরের কাছে ঝড়ের আগে বালুর ব্যাগ ভর্তি করতে দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ সময় কেউ কেউ জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য মজুত করছিলেন। আবার কেউ গাড়িতে পর্যাপ্ত গ্যাস ভরে নিচ্ছিলেন।
এনএইচসি বলেছে, ঘূর্ণিঝড়টি লুইজিয়ানা ও পার্শ্ববর্তী মিসিসিপির ওপর দিয়ে অগ্রসর হয়ে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে লুইজিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণার অনুরোধ করা হয়, যা তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অনুমোদন করেন। স্থানীয় সময় সকাল ছয়টার দিকে কারফিউ শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে জেফ ল্যান্ড্রি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কেন্দ্র সরকারের এ সহায়তা জীবন ও সম্পদ বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
লুইজিয়ানা ন্যাশনাল গার্ড এক্স পোস্টে বলেছে, তাদের সেনারা ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে যানবাহনে জ্বালানি ভরে রাখছে। মঙ্গলবার বাহিনীটি জানিয়েছিল, অনুসন্ধান, উদ্ধার, দুর্গত মানুষকে সরিয়ে নেওয়া এবং জরুরি জিনিসপত্র সরবরাহের জন্য হেলিকপ্টার ও নৌকা প্রস্তুত করে রেখেছে তারা।
সরকারি ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ব্যাটন রুজ শহরের আশপাশের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।