রাজশাহী থেকে অপহরণ হওয়া নারী চিকিৎসক শাকিরা তাসনিম দোলাকে (২৬) পাবনা থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় র্যাব চারজনকে গ্রেফতারও করেছে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার একটি বাসায় এ অভিযান চালায় র্যাব।
পুলিশ বলছে, অপহরণকাণ্ডের মূলহোতা তানজিম খান তাজ ওরফে নিরব (৩০) পেশায় ডিম ব্যবসায়ী। তবে তিনি ম্যাজিস্ট্রেট সেজে প্রেমের সম্পর্ক গড়েছিলেন নারী চিকিৎসকের সঙ্গে। আসল পরিচয় জেনে পরিবার বিয়ে দিতে না চাইলে তিনি সহযোগীদের নিয়ে ওই চিকিৎসককে অপহরণ করেন। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব তানজিম খানকেও গ্রেফতার করেছে। তার বাবার নাম আবু হানিফ কাজী। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামে তার বাড়ি। গ্রেফতার অন্যরা হলেন- তানজিমের সহযোগী পাবনার সুজানগর উপজেলার চর গোবিন্দপুর গ্রামের সেলিম মল্লিক (৩৫), সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার বড়ংগাইল গ্রামের সজিব হোসেন (২৩) ও মাইক্রোবাসের চালক আশরাফুল ইসলাম (৩৫)। আশরাফুলের বাড়ি সুজানগর উপজেলার বদনপুর গ্রামে।
বুধবার বিকালে র্যাব-৫, রাজশাহীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অপহরণের ঘটনাটি জানাজানি হলে র্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাব-৫ এবং র্যাব-১২ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে পাবনা থেকে ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে এবং চারজনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, তানজিম পেশায় ডিম ব্যবসায়ী; কিন্তু তিনি ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তার আসল পরিচয় জানতে পেরে পরিবার বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ কারণেই তানজিম ওই চিকিৎসককে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
ডা. শাকিরা নগরীর ভদ্রা আবাসিক এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন। গত ৩০ ডিসেম্বর ফজরের আজানের পর শাকিরার বাবা আবু তাহের খুরশিদ বকুল নামাজের জন্য মসজিদে যেতে বাড়ি থেকে বের হন। তিনি পাঁচতলা বাড়ির প্রধান ফটকে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যান। তিনি বাড়ি থেকে বের হলেই অপহরণকারীরা তাকে জিম্মি করে চাবি কেড়ে নেয়। এরপর বাড়ির দোতলায় উঠে তারা চিকিৎসক শাকিরাকে টেনে নামাতে শুরু করে।
এ সময় বাধা দিতে গেলে শাকিরার মা রেহেনা পারভীন ওরফে শিউলিকে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেওয়া হয়। তারা মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। এরপর বিছানায় ফেলে গলা চেপে ধরে। তিনি পড়ে গেলে বাবা-মেয়েকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
গাড়িতে তোলার পরই মুখ বেঁধে ইনজেকশন পুশ করা হয়। বকুলের চেতনা ফিরে এলে তাকে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় মহাসড়কের পাশে নামিয়ে দেওয়া হয়। আর শাকিরাকে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে বকুল সলঙ্গা থানা-পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে ফিরে আসেন। পরে রাতে তিনি থানায় মামলা করেন।
নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বুধবার সন্ধ্যায় জানান, আসামিদের থানায় নিতে তারা র্যাব-৫ এর সদর দপ্তরে যাচ্ছেন। আসামি বুঝে নিয়ে তাদের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।