
মালয়েশিয়ায় শুরু হচ্ছে ৪৬তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন। সম্মেলন সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নিয়েছে দেশটির সরকার। সম্মেলনে আসিয়ানের কর্মীসহ প্রায় দুই লাখ প্রতিনিধি জড়ো হবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২৬ ও ২৭ মে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে কুয়ালালামপুর কনভেনশন সেন্টারে।
সরকারের মুখ্য সচিব তানশ্রী শামসুল আজরি আবু বকর বলেছেন, সবচেয়ে বড় এই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি এখন পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে চলছে এবং উপসাগরীয় দেশ এবং চীনের ১৯ জন রাষ্ট্রপ্রধানের যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে।
৪৬তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন ছাড়াও, আসিয়ান ২০২৫ এর সভাপতি হিসেবে মালয়েশিয়া অক্টোবরে ডায়ালগ পার্টনারদের সঙ্গে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে।
৪৬তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে ১০টি আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রের নেতারা আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবেন, পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তি ও টেকসইতার নীতিগুলিকে সমর্থন করবেন।

২০২৫ সালের আসিয়ানের প্রতিপাদ্য হলো ‘অন্তর্ভুক্তি এবং স্থায়িত্ব’ যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সম্পৃক্ততার ঐক্যবদ্ধ ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং একটি স্থিতিস্থাপক ও ন্যায়সংগত ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য এই অঞ্চলের সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।
এর আগে ১৯৭৭, ১৯৯৭, ২০০৫ এবং ২০১৫ সালে চারবার আসিয়ানের চেয়ারম্যানের পদে নিয়োজিত ছিল মালয়েশিয়া।
এদিকে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫ উপলক্ষে ২৩ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত কুয়ালালামপুর ও ক্লাং ভ্যালির মোট ২৫টি সড়ক-মহাসড়ক সম্পূর্ণ ও আংশিকভাবে যান চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে মালয়েশিয়া।
দেশটির সরকারি মুখপাত্র বারনামা জাবাতান ট্রাফিক ইভেস্টিগেশন অ্যান্ড ইনফোর্সমেন্ট বিভাগ (জেএসপিটি) এর উদ্ধৃতি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে। বুকিত আমান ট্রাফিক ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক দাতুক সেরি মহম্মদ ইউসরি হাসান বাসরি বলেন, আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন নেতাদের যাওয়া ও আসা নির্বিঘ্ন করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বারনামা আরও জানিয়েছে, ২৩ থেকে ২৬ মে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে কেএলআইএ এক্সপ্রেসওয়ে, এলিট হাইওয়ে (কেএলআইএ- পুত্রাজায়া), এনকেভিই হাইওয়ে (সুবাং–জালান দুতা), গুথরিয়ে করিডোর এক্সপ্রেসওয়ে, নর্থ–সাউথ এক্সপ্রেসওয়ে (সুবাং–জালান দূতা), মেক্স হাইওয়ে, কেএল-সেরেম্বান হাইওয়ে, পুত্রাজায়া রিং রোড এবং কুয়ালালামপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে।
এছাড়াও জালান ইস্তানা, জালান তুন রাজাক, জালান আমপাং, জালান সুলতান ইসমাইল, জালান বুকিত বিনতাং, জালান ইম্বি, জালান পার্লিমেন ও জালান কুচিংয়ও এর আওতায় থাকবে।
২৬ মে সকাল ৮টা, বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট ও রাত ৭টা থেকে জালান আমপাং, জালান পি. রামলী জংশন, জালান সুলতান ইসমাইল, জালান পেরেক, জালান পিনাং, জালান স্তনের, জালান কিঅ পেং ও পার্সিয়ারান কেএলসিসি অঞ্চলে সম্পূর্ণ বা আংশিক সড়ক বন্ধ থাকবে যতক্ষণ না প্রোগ্রাম শেষ হয়।
২৭ মে তিনটি সময় পর্বে যান চলাচল সীমিত থাকবে। সকাল ৮টা থেকে ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জালান আমপাং, জালান সুলতান ইসমাইল, জালান পেরেক, জালান পিনাং, জালান স্তনের ও র্সিয়ারান কেএলসিসি এলাকায় গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকবে। দুপুর ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে ১টা পর্যন্ত জালান তুন রাজাক, জালান মহামেরু এবং জালান সুলতান আব্দুল হালিম পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট থেকে ৩টা পর্যন্ত জালান পার্লিমেন, জালান কুচিং, জালান সুলতান ইসমাইল, জালান পি. রামলী, জালান পেরাক, জালান পিনাং, জালান স্তনের ও জালান কিয়া পেং এলাকায় যান চলাচলে প্রভাব পড়বে।
২৮ মে সকাল ৮টা থেকে কেএলআইএ এক্সপ্রেসওয়ে, এলিট হাইওয়ে, এনকেভিই, গুথরিয়ে কোররিডোর, নর্থ–সাউথ এক্সপ্রেসওয়ে, মেক্স হাইওয়ে, কল–সেরেম্বান হাইওয়ে, পুত্রাজায়া রিং রোড এবং কুয়ালালামপুর শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে।
দেশটির গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদে পুলিশ সাধারণ জনগণকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে এবং সম্মেলনের সময় অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার আগে ট্রাফিক আপডেট জেনে নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।