দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ ভানুয়াতুতে ৭.৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে ২ জন চীনা নাগরিকসহ অন্তত ১৪ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
মঙ্গবারের এই দুর্যোগপূর্ণ ঘটনার পর দেশটির সরকার জরুরি সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের প্রাথমিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভূমিকম্পে ভানুয়াতুর ৩,৩৪,০০০ জন জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ১,১৬,০০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। প্রধান শহর পোর্ট ভিলার হাসপাতালগুলোতে প্রায় ২০০ জন আহত রোগীর চিকিৎসা চলছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি পোর্ট ভিলার ৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে কেন্দ্রীভূত ছিল। এর পরে ৫.০ থেকে ৫.৫ মাত্রার চারটি আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে এবং সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা ছবিতে দেখা গেছে, অনেক ভবন ভেঙে পড়েছে। ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন কূটনৈতিক মিশনগুলোর ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফরাসি সামরিক বিমান নিউ ক্যালেডোনিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ার, নার্স, উদ্ধারকারী এবং ২.৭ টন পানি, রেশন এবং অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে এসেছে।
এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (IFRC) প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান কেটি গ্রিনউড জানান, উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে এবং এখন মূলত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- চিকিৎসা সেবা, আশ্রয় এবং পানির ব্যবস্থা করার দিকে মনোনিবেশ করা হচ্ছে।
ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রী চার্লট সালওয়াই তার দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২ জন চীনা নাগরিক নিহত এবং অপর ২ জন আহত হয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়াং ভূমিকম্পের পরপরই অনুসন্ধান ও চিকিৎসা দলের সহায়তা ঘোষণা করেছেন।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, এই দুর্যোগ মোকাবিলায় আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জান-বাপটিস্ট জ্যাঙ্গেন ভিলমার জানিয়েছেন, একটি পোর্টেবল স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা বিমানবন্দরে স্থাপন করা হয়েছে।
ভানুয়াতু: প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা
ভানুয়াতু প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অফ ফায়ারের ওপর অবস্থিত। যা পৃথিবীর সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। টেকটোনিক প্লেটের সীমানায় অবস্থানের কারণে দেশটি প্রায়ই শক্তিশালী ভূমিকম্পের শিকার হয়।
উদ্ধার কার্যক্রম এবং মানবিক সহায়তার জন্য এখন আন্তর্জাতিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি