মোনাকোর ডিফেন্ডার উইলফ্রেড সিঙ্গো ডান পাশ দিয়ে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন। পিএসজির গোলরক্ষক জিয়ানলুইগি দোন্নারুমা ছুটে গিয়ে দেয়াল হয়ে বসে পড়েন। সিঙ্গোর শট প্রতিহত হয় সেই দেয়ালে। কিন্তু দৌড়ের গতি আর সামলে উঠতে পারেননি সিঙ্গো। মোনাকোর এই খেলোয়াড় চেষ্টা করেন দোনারুম্মার শরীরের ওপর দিয়ে লাফিয়ে পার হতে। কিন্তু ততক্ষণে তার জুতার স্পাইক লেগে যায় পিএসজির গোলরক্ষক দোন্নারুমার মুখের ডানপাশে। চোট পেয়ে হাতে মুখ ঢেকে শুয়ে পড়েন এই গোলরক্ষক। তার কিপিং গ্লাভস আর মাঠের সবুজ ঘাস মুহূর্তে লাল হয়ে ওঠে তাজা রক্তে।
গতকাল বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ফরাসি লিগে পিএসজি বনাম মোনাকো ম্যাচে ঘটেছে এই বীভৎস ঘটনা। মারাত্মক চোট নিয়ে মাঠ ছেড়ে যেতে হয়েছে পিএসজির গোলরক্ষক দোন্নারুমাকে। ম্যাচটা অবশ্য শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানে জিতেছে পিএসজি। উসমান দেম্বেলে জোড়া গোল করেছেন। বাকি গোলদুটি গনসালো রামোস এবং ডিজায়ার দুরের।
মোনাকোর হয়ে এলিয়সে বেন সেঘির এবং ব্রিল এমবোলো দুটি গোল শোধ করেন।
তার আগে ম্যাচের ১৭ মিনিটে মোনাকোর সেই আক্রমণে আহত হন দোন্নারুমা। ইতালিয়ান গোলরক্ষকের চোখের নিচে গালের বেশ কয়েক জায়গায় বাজেভাবে কেটে গেছে। ডজনখানেক স্ট্যাপল দিয়ে ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত বন্ধ করা হয়। এ সময় খেলা বন্ধ থাকে বেশ কিছুক্ষণ। একটু ধাতস্থ হয়েই মাঠ ছাড়েন দোনারুম্মা। বদলি হিসেবে নামেন রাশিয়ান গোলরক্ষক মাতভেই সাফানভ।
এমন বিপজ্জনক খেলার পরও অবশ্য রেফারি সিঙ্গোকে কার্ড দেখাননি। এর কিছুক্ষণ আগে একবার হলুদ কার্ড দেখেছি;লেন এই আইভরিয়ান ডিফেন্ডার। তাই আরেকবার হলুদ কার্ড দেখলেই তাকে মাঠ ছাড়তে হতো। ফরাসি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রেফারি দোন্নারুমার চোট পাওয়াকে খেলার ঘটনাক্রম হিসেবেই দেখছেন। তার কাছে সিঙ্গোর এই কাণ্ড ইচ্ছাকৃত মনে হয়নি।
সিঙ্গোকে কার্ড না দেখানোয় রেফারির সমালোচনা করেছেন পিএসজির অধিনায়ক মারকিনিয়োস। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না রেফারির ঘটনাটা ঠিকমতো দেখেছেন কি না, তবে ভিএআরের হস্তক্ষেপ করা দরকার ছিল। এ রকম অবস্থায় লাল কার্ড না দেখানোটাকে বড় সিদ্ধান্তই বলতে হবে।’
তবে পিএসজির কোচ লুইস এনরিকে ব্যাপারটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছেন। সিঙ্গো বা রেফারি কারো বিরুদ্ধেই অভিযোগ নেই তার। তিনি বলেন, ‘ফুটবলাররা তো আর ইচ্ছে করে আঘাত করে না! এই ধরনের ম্যাচে রেফারির কাজটাও কঠিন। রেফারির কাজ নিয়ে কথা বলব না আমি।’
তবে দিনটা ভালোই গেছে পিএসজির। বড় জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করেছে তারা। ১৬ ম্যাচে ১২ জয় ও ৪ ড্রয়ে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লুইস এনরিকের দল। ১৫ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে মার্শেই। ১৬ ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে তিনে মোনাকো।