চেন্নাই টেস্টে প্রথম সেশনের পর দ্বিতীয় সেশনেও ভারতের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েছেন বাংলাদেশি বোলাররা। ৬ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে চা-বিরতিতে গেছে ভারত। রবিন্দ্রন অশ্বিন ২১ আর রবীন্দ্র জাদেজা ৭ রানে অপরাজিত আছেন।
চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। মেঘাচ্ছন্ন সকালে শুরুটা বেশ ভালো করেন বাংলাদেশের দুই পেসার তাসকিন আহমেদ আর হাসান মাহমুদ। রান তুলতে রীতিমত ঘাম ঝরেছে ভারতের। প্রথম ৪ ওভারে তারা নিতে পারে মোটে ৮ রান।
এর মধ্যে উইকেট পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত এক ডেলিভারি সরাসরি প্যাডে আঘাত করে রোহিত শর্মার। বাংলাদেশের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
ক্লোজ কল হওয়ায় রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল স্টাম্পের ওপরের দিকে বল ছুঁয়ে যেতো। কিন্তু আম্পায়ার্স কল হওয়ায় সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান রোহিত শর্মা। আম্পায়ার আউট দিলে সেটি আউট হতো।
তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি রোহিত। হাসান মাহমুদ তার পরের ওভারেই তুলে নিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ককে। তার সুইংয়ে এজ হয়ে দ্বিতীয় স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ হন রোহিত। ১৯ বলে করেন ৬ রান।
এরপর শুভমান গিলকেও শূন্য রানে ফিরিয়েছেন হাসান মাহমুদ। তার লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ হন গিল।
ভারতীয় ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ বিরাট কোহলিও দাঁড়াতে পারেননি হাসানের সামনে। দুর্দান্ত আউটসুইংয়ে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৬ রান করেই। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত, সবগুলো উইকেটই হাসানের।
চেন্নাই টেস্টের প্রথম সেশনে প্রথম ঘণ্টাটা ছিল পুরোপুরি বাংলাদেশের। পেসার হাসান মাহমুদের তোপে রীতিমত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ভারত। সেখান থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন জশস্বী জয়সওয়াল আর রিশাভ পান্ত।
ভারত ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে তারা যোগ করেন ৬২ রান। ২৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৮৮ রান নিয়ে প্রথম দিনের লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিল ভারত। লাঞ্চের পরপরই আঘাত হেনেছেন সেই হাসান মাহমুদ।
বলটি অবশ্য ওয়াইড ছিল অনেকটাই। দেরিতে শট খেলেন পান্ত। বল ব্যাটে ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে। ৩৯ রানে সাজঘরের পথ ধরেন পান্ত, হতাশায় নিজের প্যাডেই ব্যাট দিয়ে আঘাত করেন। ৯৬ রানে ভারত হারায় ৪ উইকেট।
গতিতে ব্যাটারদের ভড়কে দেওয়ার সামর্থ্যে বাংলাদেশি পেসারদের মধ্যে নাহিদ রানা এখন সবার ওপরে। এবার নাহিদের গতিতে পরাস্ত হলেন অনেকটা সময় একপ্রান্ত ধরে রেখে হাফসেঞ্চুরি হাঁকানো জশস্বী জয়সওয়াল।
নাহিদের ১৪৮ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতির বল বুঝতে না পেরে ব্যাট ছুঁইয়ে দিয়েছিলেন জয়সওয়াল। প্রথম স্লিপে ক্যাচ নেন সাদমান ইসলাম। ১১৮ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৫৬ করে সাজঘরের পথ ধরেন ভারতীয় ওপেনার।
এর পরের ওভারে লোকেশ রাহুল (৫২ বলে ১৬) পড়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণি ফাঁদে। শর্ট লেগে দারুণ এক নিচু ক্যাচ নিয়েছেন জাকির হাসান। ৫ বলের মধ্যে ২ উইকেট তুলে নিয়ে ফের ভারতকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারায় ভারত।