
নানা জল্পনা-কল্পনা ও পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারির পর অবশেষে ওমানে শনিবার (১২ এপ্রিল) মুখোমুখি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রতিনিধি দল।
শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, শনিবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তেহরান বলছে, এদিনই এ বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চায় তারা।
গত সোমবার (৭ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন ওমানে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আলোচনা শুরু হবে।
জানা গেছে, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ নেতৃত্ব দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে, আর ইরানের প্রতিনিধিত্ব করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। মধ্যস্থতায় থাকবেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আল-বুসাইদি।
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে হতে চলা এই আলোচনার দিকে সবার দৃষ্টি। উত্তেজনাও তাই বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। বহুল আলোচিত এই বৈঠকের প্রাক্কালে ইরান জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘বাস্তব ও ন্যায্য’ চুক্তিতে আগ্রহী তেহরান। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলী শামখানি বলেছেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ‘বাস্তব ও ন্যায্য’ চুক্তি করতে চায় ইরান।
এক্সে দেয়া একটি পোস্টে তিনি বলেন, ‘ক্যামেরার সামনে শুধু কথা বলার অভিনয় নয়, তেহরান বাস্তুব ও ন্যায্য চুক্তি চায়।
এদিকে বৈঠকের আগে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লিভিট সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান ইরান যেন কখনও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে।
তিনি বলেন, কূটনৈতিক আলোচনাকে অগ্রাধিকার দিলেও আলোচনায় ব্যর্থ হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে। হয় ট্রাম্পের শর্ত মানা, নয়তো ভয়ঙ্কর পরিণতির জন্য প্রস্তুত হওয়া। ইরানের সামনে এখন এই দুটি পথ খোলা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সাংবাদিকদের বলেন, পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ক এ আলোচনা ব্যর্থ হলে ‘সবকিছু জ্বলে পুড়ে ছারখার হবে’।
এই উত্তপ্ত আবহে সাবেক ইরানি কূটনীতিক ও বিশ্লেষক মেহরদাদ খন্সারি বলেন, আলোচনায় ব্যর্থ হলে সামরিক সংঘাত এখন বাস্তব সম্ভাবনা। তার মতে, ইসরাইল এমন সংঘাতকে উসকে দিতে চাইবে, আর যুক্তরাষ্ট্রও তাতে জড়াতে পারে। তবে ইরান একটি চুক্তি থেকে উপকৃত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে তেহরানে শুক্রবার নামাজের পর হাজারো ইরানি বিক্ষোভে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। প্রার্থনারত ইমাম আয়াতুল্লাহ কাজেম সেদ্দিকি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি আলোচনার যোগ্যতা রাখে না। তারা বারবার চুক্তি ভঙ্গ করেছে, আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা করেনি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।