গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে গতকাল রোববার ইসরায়েলের জেরুজালেমে এক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন নেতানিয়াহু। তবে ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীদের ধিক্কারের মুখে নেতানিয়াহু বক্তব্য থামিয়ে দিতে বাধ্য হন।
রোববার ওই অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, বক্তব্য শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই উপস্থিত দর্শকেরা চিৎকার শুরু করলে নেতানিয়াহু পোডিয়ামে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাঁর বক্তব্যের মাঝখানে এক মিনিটের বেশি সময় ধরে দর্শকেরা হট্টগোল করেন। কয়েকজন ব্যক্তি নেতানিয়াহুর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাকে ধিক্কার’।
বিক্ষোভকারীদের একজন বারবার চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে।’
টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুরুতে ওই স্মরণ অনুষ্ঠানে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের বক্তৃতার সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল না। কারণ, আশঙ্কা করা হচ্ছিল নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা ইসরায়েল সরকারের সমালোচনা করতে পারেন। তবে অনুষ্ঠানস্থলে বিক্ষোভের মুখে স্বজনদের বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হয়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন। ওই সময় ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়। এর মধ্যে প্রায় ১০০ জন এখনো গাজায় আছেন।
গাজায় থেকে যাওয়া জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য নেতানিয়াহুর প্রশাসনের ওপর জনগণের পাশাপাশি কূটনৈতিক চাপ বাড়ছে।
ইতিমধ্যে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল–সিসি গতকাল একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। কিছু ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে চার ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে গাজা উপত্যকায় দুই দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সিসি এমন সময়ে প্রস্তাবটি দিয়েছেন, যখন গাজায় যুদ্ধ অবসানের চেষ্টায় কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিআইএ এবং ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
কায়রোতে আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাদজিদ টেবুনের সঙ্গে যৌথভাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন সিসি। সেখানে তিনি বলেন, অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হওয়া উচিত।
চলতি মাসের শুরুর দিকে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার পর যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য ইসরায়েল সরকারের ওপর চাপ বেড়েছে। কয়েকজন পশ্চিমা নেতার পাশাপাশি জিম্মিদের স্বজনেরা চুক্তির জন্য চাপ দিচ্ছেন।