বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানার আশঙ্কা না থাকলেও এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় বইছে ঝোড়ো হাওয়া, উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর।
এমন পরিস্থিতিতে ঢেউয়ের তোড়ে কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে নৌবাহিনীর জেটিটি সেখানেই বেঁধে রাখা একটি বার্জের ধাক্কায় ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার সকালে জেটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন। তবে কী কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে তা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তাল রয়েছে সাগর। বুধবার রাত ২টা-৩টার দিকে ছিল পূর্ণ জোয়ার। ওই সময় প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে জেটির সঙ্গে বাঁধা একটি ছোট বার্জের ধাক্কায় জেটিটি মাঝখান থেকে ভেঙে যায়।
জেটিঘাটের চা দোকানি আবদুল মাজেদ জানান, বার্জটি জেটির সঙ্গে বাঁধা ছিল। মধ্যরাত থেকে সেখানে বাতাসের ধাক্কায় বড় বড় আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু তখন জেটিতে ও বার্জে কেউ ছিল না। এমনকি রাত ২টা-৩টার দিকে জেটি ভেঙে যাওয়ার পরও সকাল ১০টা পর্যন্ত কাউকে জেটির আশেপাশে দেখা যায়নি।
জেটি সংলগ্ন তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপের বৈদ্যুতিক শাখার একজন কর্মী জানান, গত কয়েকদিন ধরে ছোট আকারের তিনটি নৌযান জেটিতে কোনও কাজ করছিল। নৌযানগুলো সরিয়ে না রাখার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন তিনি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক নৌমহড়া অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী জেটিটি নির্মাণ করেছিল। দীর্ঘ সৈকত দ্বিখণ্ডিত করে এই জেটি নির্মাণ করায় পরিবেশবাদীরা শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল।
২০২২ সালে পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত রুল জারি করেছিল জেটিটি অপসারণের জন্য। ফোরাম সভাপতি আনম হেলাল উদ্দিন জানান, আদালতের রুল জারির পরেও জেটি অপসারণ করা হয়নি।
এদিকে গত বছর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকবাহী জাহাজ আসা-যাওয়া করছিল এই জেটি দিয়েই। আগামী পয়লা নভেম্বর থেকেও এই জেটি দিয়ে দ্বীপে যাতায়াতের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল জাহাজ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে।