দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের ১৮ দিনে ডেঙ্গুতে ৩৬ জনের মৃত্যু হলো, যা চলতি বছর কোনো এক মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এই ৩৬ জনের মধ্যে সাতজনই শিশু।
আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গু নিয়ে ৮৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজন করে মোট ছয়জনের মৃত্যু হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২৫১ রোগী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৪৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১৪২, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২১, খুলনা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৪, বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৬, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৮, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ২০ ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ১৮ জন ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১ হাজার ৭৯ জন। আর এ বছর এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১৯ জনের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৭ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে। আর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ৬ শতাংশ নারী ও ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী। এ সময় হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮ হাজার ৫০০ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬০৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে শুরু হয় ২০০০ সালে। ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৪৪ হাজার ২৪৬ জন এ রোগে আক্রান্ত হন। এ সময় মারা যান ৮৫৩ জন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। এ সময় ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের।