বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে যশোরে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত যশোরে ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে শহরের অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। টানা বর্ষণে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নআয় ও জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকেই যশোরে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। কখনো ভারী, কখনো হালকা এই বৃষ্টিপাত শনিবার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টিপাতের এই ধারা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে অব্যাহত এই বৃষ্টিপাতে যশোরের অনেক নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের বেজপাড়া, টিবি ক্লিনিকপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়া, শংকরপুর, মিশনপাড়া, উপশহর, চাঁচড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, নাজির শংকরপুর, বকচর, আবরপুরসহ শহরের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। শংকরপুর, বেজপাড়া, খড়কি, কারবালা, স্টেডিয়ামপাড়ার অনেক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে।
শহরের শংকরপুর বটতলা এলাকার বাসিন্দা লিটন হোসেন জানান, তাদের এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আগে ড্রেনের মাধ্যমে এই পানি হরিণার বিলে নেমে যেত। এখন সেখানে বড় বড় ভবন হওয়ায় ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। পানি নামতে পারছে না। কিন্তু শহরের পানি এই এলাকায় এসে জমা হচ্ছে।
একই এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, আগে শহরের পানি হরিণার বিল দিয়ে মুক্তেশ্বরী নদীতে যেত। কিন্তু ২০১০ সালে হরিণার বিলে মেডিকেল কলেজ হওয়ার পর আশপাশে আরও অনেক স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এতে বিল দিয়ে পানি আগের মতো নিষ্কাশিত হতে পারছে না। ফলে এই এলাকা বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে।
শহরের খড়কির শাহ আবদুল করিম সড়কের সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের দক্ষিণ গেট থেকে খড়কি মোড় হয়ে পীরবাড়ি, কবরস্থান পর্যন্ত হাঁটুসমান পানি জমেছে। খড়কি দক্ষিণপাড়া-পশ্চিমপাড়া হাজামপাড়া, খড়কি রেললাইন পাড়ার বাসিন্দাদের বাড়ির উঠানে হাঁটুপানি। এই সড়কে চলাচলকারী রিকশা, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসের যাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। আবার এই পানির মধ্যে দিয়ে রিকশা, ইজিবাইক যেতে রাজি না হওয়ায় অনেককে পায়ের জুতা হাতে নিয়ে হেঁটে চলাচল করতে দেখা যায়।
বেজপাড়া কবরস্থান এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ আহমেদ জানান, তাদের এলাকার ড্রেন উপচে নোংরা পানি রাস্তায় থৈ থৈ করছে। অনেকের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এজন্য পানি নামতে না পারায় গোটা এলাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।