
সারাদেশে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগ ও কোরবানির শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখ এই উৎসব উদযাপন করা হয়।
সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সকাল ৭টার আগেই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়। এই জামাতে ইমামতি করেন তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান মাদানী।
আর ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, রাজনীতিবিদসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঈদগাহের প্রধান জামাতে অংশ নেন।
ঈদুল আজহার মূল শিক্ষা হলো ত্যাগ। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আদর্শ অনুসরণে সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কোরবানি করে থাকেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্ধারিত স্থানগুলোতে পশু কোরবানি করা হচ্ছে। কোরবানির মাংস তিনভাগে ভাগ করে আত্মীয়স্বজন, দরিদ্র ও প্রতিবেশীদের মাঝে বণ্টন করার নিয়ম রয়েছে।
এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোরবানির পশুর বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রায় ২০ হাজার ২৬৭ পরিচ্ছন্ন কর্মী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে দুই সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দ্রুত ও নির্ধারিত সময়েই বর্জ্য অপসারণে হটলাইন খোলা থাকবে এবং বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রায় ১৩ লাখ ৯০ হাজার প্লাস্টিক, পলিব্যাগ ও বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ সরবরাহ করেছে দুই সিটি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গেছেন অনেকে। ফলে রাজধানীর রাস্তাঘাট প্রায়ই ফাঁকা। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে বলেছেন, মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও চরম ত্যাগের নিদর্শন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল (আঃ)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হন। এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সারা বিশ্বের মুসলমানগণ ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ ও আত্মদানের এই মহান দৃষ্টান্ত কেয়ামত পর্যন্ত বিশ্ববাসীর কাছে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।