
বাঙালি নির্মাতা এবাদুর রহমান পরিচালিত ‘ট্র্যাকটাস বেঙ্গালিয়াম’ ছবিটি দেখানো হবে ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে।
এর বাণিজ্যিক শাখা মার্শে দ্যু ফিল্মে দেখানোর জন্য নেওয়া ছবিটি বাংলাদেশেও মুক্তি প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নির্মাতারা। দেশে এর নাম ‘বাঙালি বিলাস’। সামাজিকমাধ্যমে ছবির ট্রেলার প্রকাশের ঘণ্টা পেরোতেই তা সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন পরিচালক।
‘বাঙালি বিলাস’ যৌনতা, নারীবাদ, বিশ্বাসঘাতকতা এবং রাজনীতিকে উপজীব্য করে নির্মিত সিনেমা। দর্শককে গভীর সংবেদনশীল সিনেমাটিক অভিজ্ঞতা দেওয়ার বাসনা নিয়ে এটি বানিয়েছিলেন এবাদুর রহমান। সেখানে দেখানো হয়েছে ছবির মধ্যে ছবি কাঠামোয় দুজন মুসলিম নারী, একজন পুরুষতান্ত্রিক নির্মাতার হাত থেকে নিজেদের শরীর ও ভাষার নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে নামে!

গতকাল (২২ মে) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে ছবির ৩ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ট্রেলারটি পোস্ট করেন নির্মাতা। এটি শুরু হতে দেখা গেছে কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনেত্রীর বিকৃত যৌন অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে। সেখানে বুদ্ধিজীবী গায়ত্রী স্পিভাগকেও কথা বলতে দেখা গেছে। পরিচালক জানান, এ রকম চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ফারহানা হামিদকে ফোনে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়েছে। সে কারণে বাধ্য হয়ে তিনি ট্রেলারটি সরিয়ে নেন।
ফ্রান্সের কান শহর থেকে এবাদুর রহমান বলেন, ‘সিনেমার বিষয়বস্তুর কারণে প্রথম থেকেই বিরোধীতার মুখোমুখি হচ্ছিলাম। আমাকে বেশ কয়েকজন বলেছে … এক ঘণ্টা পর ট্রেলারটা নামিয়ে ফেলেছি। যারা আমাদের সিনেমায় অভিনয় করেছেন, বিশেষ করে ফারহানা হামিদ, মূল চরিত্রে অভিনয় করেছে, তাকে টেলিফোনে হেনস্তা করা হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, তাকে নাকি ভাল্গারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, সে নাকি বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। সে ম্যাসেজ করেছে, “ভাই প্লিজ সেভ মি”। আমার নৈতিক দায়িত্ব আমার শিল্পীকে রক্ষা করা। এ ছাড়া আরও কিছু ইস্যু আছে।’

সমসাময়িক বাংলাদেশি চলচ্চিত্র-ধারার বাইরে বেরিয়ে ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে, দাবি নির্মাতার। এটি কবে দেশে মুক্তি পাবে তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর। তবে আপাতত দেশে এ ছবি মুক্তির কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
‘বাঙালি বিলাস’ ছবিটি ‘ট্র্যাকটাস বেঙ্গালিয়াম’ নামে দেশের বাইরে প্রদর্শিত হচ্ছে। সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাঈমা তাসনিম, শতাব্দী ওয়াদুদ, আজাদ আবুল কালাম ও ভারতের ঋ সেন। নির্মাতা জানান, বিদেশের বেশ কয়েকটি উৎসবে ছবিটি দেখানো হবে। তারপর বিদেশি পরিবেশকদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে সেটি বিপণনের চেষ্টা করবেন।