
ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এর মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তান রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান সাঈদ শেখ। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করলেও, এর পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। অন্যদিকে, পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান সাঈদ শেখ নিউজউইককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে লক্ষ্য নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কাজ করছে, কাশ্মীর ইস্যু তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এখানে কেবল দুই প্রতিবেশী দেশ নয়, বরং পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তিই আমাদের লক্ষ্য। তবে শান্তি চাই মর্যাদার সঙ্গে। সম্মানহীনভাবে টিকে থাকার চেয়ে সম্মানের সঙ্গে মৃত্যুকেও বেছে নেব।
রাষ্ট্রদূত সাঈদ শেখ জানান, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার মার্কিন প্রশাসনের উচিত একটি দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর শান্তি উদ্যোগ নেওয়া, যেন ভবিষ্যতে এই উত্তেজনা বারবার ফিরে না আসে। তিনি কাশ্মীর সমস্যাকে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মূল কারণ বলে উল্লেখ করেন।
একইদিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ সময় ভারতকে ‘দায়িত্বশীল আচরণ’ করতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সৃষ্টির অনুরোধ জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, রুবিও উভয় দেশকে সরাসরি যোগাযোগ পুনরায় শুরু করে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, পহেলগামের হামলা ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ হতে পারে, যার উদ্দেশ্য পাকিস্তানকে দায়ী করা। তাছাড়া এখন পর্যন্ত ভারতের কাছ থেকে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
পাশাপাশি, পাকিস্তান বিমান বাহিনী জানায়, যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে তারা প্রস্তুত। জেএফ-১৭ ব্লক থ্রি যুদ্ধবিমানসহ তাদের সর্বাধুনিক সক্ষমতার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম রেডিও পাকিস্তান।
এদিকে, উত্তেজনার ফলে আজাদ কাশ্মীরের এক হাজারের বেশি মাদ্রাসা ১০ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, সীমান্তে উত্তেজনা ও সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।