বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে আওয়ামী লীগের লোকজনসহ বহিরাগতরা রয়েছে জানিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আজ থেকে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু হবে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে বৈঠকের পর উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণী উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে আমরা মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে একাধিক সভা করেছি। আমাদের শিল্প উপদেষ্টা তিনিও কথা বলছেন। সব শ্রমিক নেতার কাছ থেকে আমরা এটাই জানতে পেরেছি, এখন যে আন্দোলনগুলো হচ্ছে, শ্রমিক নেতারা এ আন্দোলনের প্রকৃতিটা নিজেরাও বুঝে উঠতে পারছেন না। কারণ এখানে কোনো নির্দিষ্ট দাবি উঠে আসছে না। কোনো নির্দিষ্ট দফা পাওয়া যাচ্ছে না।
‘যারা সাধারণত শ্রমিক আন্দোলন করেন, তারাও সেখানে সেভাবে নেই। বহিরাগত লোকজনের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় মালিকপক্ষ বেতন দিতে দেরি করছে, এজন্য আন্দোলন হচ্ছে। কয়েকটি স্পেসিফিক ফ্যাক্টরি আছে সেখানে মালিকপক্ষ পালিয়ে গেছে। সেখানে কিছুটা অসন্তোষ হয়েছে। সেগুলো আমরা অ্যাড্রেস করছি, সেগুলোর জন্য সরকার সফট লোন ঘোষণা দিয়েছে। সেটার পরিধি আরও বাড়ানো হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, তবে এই ছোট ছোট কয়েকটি সুনির্দিষ্ট জায়গায় অসন্তোষকে কেন্দ্র করে যে জায়গাগুলোতে ফ্যাক্টরি ক্লাস্টারগুলো আছে, সেখানে দেখা গেছে বহিরাগতরা এসে এবং বেকার যুব সংঘ নামে যারা কখনো শ্রম এরিয়ার মধ্যে কখনো আন্দোলন করেনি, গাড়ি ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটেছে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, শ্রমিক নেতারাই আমাকে বললেন যে তারা সেখানে হেঁটে এসেছেন এবং তারা দেখেছেন যে, হেলমেট ও হাফপ্যান্ট পরা যারা টোকাই, যাদের টাকা দিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য ভাড়া করা হয়। তাদের সেখানে দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, যারা ঝুট ব্যবসা নিয়ে সন্ত্রাস করছে, আওয়ামী লীগের লোকেরা যে সিন্ডিকেটগুলো সামলাতো তারা তো সেগুলো ছেড়ে চলে গেছে। এখন যারা সেগুলো দখলের পাঁয়তারা করছে এবং সেখানে সন্ত্রাস করছে, তাদের এবং যারা বহিরাগত তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে, সেটা গতকাল বলেছি।
‘স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগও আছে কিছু জায়গায়। কিছু স্থানীয় বিএনপি নেতাও রয়েছেন বলে আমরা সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আমাদের এ বিষয়ে কথা হচ্ছে। তারা যাতে তাদের নিবৃত রাখেন। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী যেসব আওয়ামী লীগ নেতা এখনো রয়ে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে যাবো।’
উপদেষ্টা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে যে তথ্য রয়েছে, সেটার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হবে। সেখানে যে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে, সেটার জন্য পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
পরিস্থিতি কতদিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আজ থেকে অ্যাকশন শুরু হবে, সেখানে ক্ষতি হয় এমন কোনো অ্যাকশন পুলিশ নেবে না। রাস্তাগুলো খালি করার জন্য যথাযথ অ্যাকশন নেবে। যারা ইন্ধন জোগাচ্ছে তাদের গ্রেফতার করা হবে।
আজকের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের শ্রমিক নেতারা আশ্বস্ত করেছেন, যে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে তাদের বোঝাবেন। তাদের সমস্যার সমাধানে আরও বৈঠক করবো। সমস্যা সমাধানে মালিক এবং শ্রমিকপক্ষ মিলে এগিয়ে যাবো।