টানা সাড়ে ১০ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত হয়েছেন প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রোববার (২৫ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় আনসার সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ার পর রাত সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ের ৩ নম্বর গেট খুলে দেওয়া হয়। এরপর বের হতে থাকেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এর আগে সকাল থেকে আনসার সদস্যরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টা থেকে তারা অবরুদ্ধ করে রাখে সচিবালয়কে। এতে করে সবগুলো গেট বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ৫টায় অফিস ছুটি হলেও রাত সাড়ে ১০টার আগে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারেননি।
সচিবালয়ে আনসারের একদল সদস্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহসহ অনেককে আটকে রেখেছেন— এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। আনসার সদস্যদের প্রতিহত করতে তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় আসেন। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে রাত পৌনে ১০টার দিকে আনসার সদস্যরা পিছু হটেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের পাশে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। পরে গেট খুলে দিলে বের হতে থাকেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এরআগে রাতে বের হওয়ার জন্য এ গেট থেকে ওই গেটে ছুটলেও, বের হতে পারেননি কর্মকর্তা কর্মচারীরা। সচিবালয়ের ভেতরে থাকা ক্যান্টিনগুলো খালি হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেশি বিপাকে পড়েন নারীরা।
রাত ৯টায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে অফিস করছি, এভাবে কি থাকা যায়। প্রতিদিন এমন আন্দোলন সচিবালয়ের মতো জায়গায় কীভাবে হয়। এটা তো কেপিআই এলাকা। বাসায় আজ যেতে পারবো কি না সেটাও জানি না। এভাবে চলতে পারে না।
ক্যান্টিন বয় রফিক জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের ক্যান্টিনে কোনো খাবার নেই। যা ছিল সব শেষ। আমরা তো খুব বেশি রাখি না। কারণ কাল আবার সরকারি ছুটি।
চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন আনসার সদস্যরা। পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তাদের প্রতিনিধিদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে, তার কিছুক্ষণ পরেই আবারও আন্দোলন শুরু করেন আনসার সদস্যরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।