রেমিট্যান্সের পালে সুবাতাস বইলেও এখন পর্যন্ত মাসে একশ কোটি ডলারের মতো প্রবাসী আয় আসে হুন্ডিতে। এমন তথ্য দিয়ে ব্যাংকাররা বলছেন, অবৈধ এ পথ বন্ধ করা গেলে দ্বিগুণ হবে প্রবাসী আয়। এদিকে, মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, তারা হুন্ডির মতো অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়।
চলতি বছরের প্রথম ৭ মাস দেশে প্রবাসী আয় এসেছে গড়ে ২ বিলিয়নের কিছুটা বেশি। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় ৫০ মিলিয়ন বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলারে।
প্রবাসী আয়ে এ সুবাতাসের কারণ সম্পর্কে অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরিবর্তিত এ পরিস্থিতিতে কমেছে অনিয়ম-দুর্নীতি, যার প্রভাব পড়ছে সবখানে। প্রবাসীরাও বৈধ পথে পাঠাচ্ছেন রেমিট্যান্স।
হুন্ডি বন্ধ করা গেলে প্রবাসী আয় এক মাসের মধ্যে বেড়ে দ্বিগুণ বলে জানান অর্থনীতিবিদরা। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের স্বল্পসুদে লোন দেয়াসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে। এতে বাড়বে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ।
প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করা গবেষণা সংস্থা রামুরুর দাবি, দেশে ৪০-৪৫ শতাংশ রেমিট্যান্স আসে হুন্ডিতে। ব্যাংকাররাও বলছেন, মাসে কমবেশি ১০০ কোটি ডলার আসে অবৈধ এ মাধ্যমে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ডলার রেট ও হুন্ডির রেট কাছাকাছি হওয়ায় প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। হুন্ডি বন্ধ করা গেলে রেমিট্যান্স বাড়বে।
আর মানি চেঞ্জার্সরা হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয় দাবি করে অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি এস এম জামান বলছেন, প্রতি মাসে ৫৬ লাখ ডলার টার্নওভার করছেন তারা। এতে ডলার ব্যাংকে ঢুকছেওনা এবং বেরও হচ্ছে না; বরং ডলারের জোগান দিচ্ছেন তারা।
তবে কীভাবে হুন্ডি বন্ধ করা সম্ভব জানতে চাইলে প্রবাসীরা বলছেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে পুরো ব্যবস্থাটি হতে হবে প্রবাসীবান্ধব; বাড়াতে হবে প্রণোদনার পরিমাণ; সহজ করতে হবে প্রক্রিয়া।
প্রবাসীদের প্রত্যাশার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে কোন কোন ব্যাংক। স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ বলেন, হুন্ডি বন্ধে প্রবাসীদের অর্থ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
প্রণোদনার পাশাপাশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে তার প্রয়োজনে ঋণ দেয়ার কথাও ভাবছে কোন কোন ব্যাংক।