
সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই মানবিক করিডোরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘মানবিক করিডোরে আমরা ইচ্ছুক যদি ইউএন চিন্তাভাবনা করে। পুরো জিনিসটা হবে দুইটি দেশের সঙ্গে কথা বলে। ইউএন যখন কাজ করবে মিয়ানমার সরকার ও আমাদের সঙ্গে কথা বলে তারপর সিদ্ধান্তে আসবে। রাখাইনে আরও যারা আছে তাদের সঙ্গেও কথা বলব।
শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব আরও বলেন, করিডোরের প্রশ্ন আসছে এ কারণে যে সেখানে সিভিল ওয়ার টাইপের কনফ্লিক্ট হচ্ছে। এ কনফ্লিক্টে পড়ে সেখানে রোহিঙ্গা, রাখাইন জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। অনেকে অনেক কষ্টে আছেন। মানবিক সংকট হয়েছে। পলিটিক্যাল পার্টিগুলো যে কথাগুলো বলছে, আমার মনে হয় তা প্রিম্যাচিউর। এটা সর্বসম্মতিক্রমে হবে। আমরা মনে করি, এটা এখনো অনেক দূরের বিষয়। যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয় আসবে তখন সবার সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশী বিনিয়োগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, বন্দরকে সামনে রেখে বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফেকচারিং হাব’ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার। এ জন্য বন্দরে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে এর সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। ইতিমধ্যে বিদেশী ভালো বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও শুরু হয়েছে। বন্দর ঘিরে মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসবে। সেইসব কোম্পানির সঙ্গে কথা চলছে, যেসব কোম্পানি ৭০ থেকে ৯০টি বন্দর হ্যান্ডলিং করছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ কাজ শেষ করতে চায় সরকার।
তিনি বলেন, তরুণদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ ম্যানুফেকচারিং হাব হলে কেবল দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য নয় পুরো রিজিওনের ৩০-৪০ কোটি লোকের সুফল ভোগ করবে। যে পণ্য এখানে তৈরি হবে, যে পণ্য মানুষজন এসে বানাবেন সেই পণ্য শুধু বাংলাদেশ ও আশপাশের দেশে বিক্রি করবেন না, তারা তা বিদেশেও রপ্তানি করবেন। এ জন্য নাম্বার ওয়ান শর্ত হচ্ছে বন্দরকে সক্ষম করে গড়ে তোলা।
প্রেস সচিব বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া, বে টার্মিনাল, পতেঙ্গা টার্মিনাল, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরসহ পুরো অঞ্চলটাই বন্দরের। এখান থেকে প্রচুর পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করতে হবে। একজন আমেরিকান রপ্তানিকারক বাংলাদেশে পণ্য বানিয়ে নিজের দেশে নিয়ে যাবে। সে চাইবে কত দ্রুত বানিয়ে পণ্য নিয়ে যেতে পরে। কস্ট অব প্রডাকশন কম, বেতন দিতে হবে কম। তাই পণ্য বানানোর পর যত দ্রুত রপ্তানি করা যায় এর জন্য বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
তথ্য দিয়ে তিনি জানান, চট্টগ্রাম ও আশপাশের টার্মিনালগুলোর সক্ষমতা ১ দশমিক ২৭ মিলিয়ন টিইইউএস (২০ ফুট দীর্ঘ) কনটেইনার। এ সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০৩০ এর মধ্যে এই সক্ষমতা ৭৮ লাখ ৬০ হাজার টিইইউএস- এ নিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ ছয় গুণ বাড়ানো। বাংলাদেশকে ইকোনমিক হাব, ম্যানুফেকচারিং হাব করতে হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিই হচ্ছে নাম্বার ওয়ান, পূর্বশর্ত।