রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়া থেকে সেনা পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বুধবার এ দাবি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ায় তিন হাজার সেনা পাঠানোর প্রমাণ তাদের নজরে এসেছে। এসব সেনা সম্ভবত ইউক্রেনে মোতায়েন করা হবে। এ পদক্ষেপের কারণে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া যদি ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করে, যেমনটা কিয়েভ অভিযোগ করেছে, তবে এটি অনেক অনেক গুরুতর বিষয়।’ রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সেনাদের কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
অস্টিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সেনা পাঠানোর প্রমাণ আছে।’
অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কাবরি সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, পূর্ব রাশিয়ার তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে উত্তর কোরিয়ার অন্তত তিন হাজার সেনা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় বিশ্বাস, চলতি মাসের শুরু থেকে মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের দেশটির ওনসান অঞ্চল থেকে রাশিয়ার পূর্বের শহর ভ্লাদিভস্তকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে পাঠানো হয় তাঁদের।
জন কাবরি বলেন, ‘যদি ওই সেনাদের ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য মোতায়েন করা হয়, তবে তাঁদের ওপর হামলা এবং তাঁদের নিশানা করা যৌক্তিক হবে। আর উত্তর কোরিয়ার সেনাদের বিপক্ষে নিজেদের রক্ষা করবে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। যেভাবে তাঁরা রুশ সেনাদের থেকে নিজেদের রক্ষা করছেন।’
দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা বলেন, রাশিয়াকে ১০ হাজার সেনা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই তাঁদের মোতায়েন সম্পন্ন হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার আইনসভার গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটির সদস্য পার্ক সুন-ওন বলেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে উত্তর কোরিয়ায় সেনাদের প্রশিক্ষণ নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সেনা পাঠানোর যে অভিযোগ, তাতে আরও ভালোভাবে প্রমাণিত হয়, রুশ সামরিক বাহিনী জনবল–সংকটে আছে। এ বিষয়ে অবগত এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে এরই মধ্যে ছয় লাখের বেশি রুশ সেনা হতাহত হয়েছেন।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, মস্কো উত্তর কোরিয়ার সেনাদের পূর্ব ইউক্রেন বা নিজেদের নিয়ন্ত্রিত কুরস্ক অঞ্চলে পাঠাতে পারে।
এদিকে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটির চেয়ার মাইক টার্নার এক বিবৃতিতে বলেন, উত্তর কোরিয়ার সেনারা যদি ইউক্রেনের সার্বভৌম ভূখণ্ড দখল করতে যান, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা উচিত।