আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস তার রানিংমেট হিসেবে টিম ওয়ালজকে বেছে নিয়েছেন। খুব কম মানুষের কাছেই সম্ভাব্য ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে পছন্দের প্রাথমিক তালিকায় ছিলেন ওয়ালজ। কিন্তু মঙ্গলবার সবাইকে অবাক করে দিয়ে তাকেই রানিংমেট হিসেবে ঘোষণা দেন কমলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে টিম ওয়ালজ খুব বেশি পরিচিত নন। তবে তিনি এখন একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা টিম ওয়ালজ বর্তমানে মিনেসোটার গভর্নর এবং প্রগতিশীল রাজনীতিক বলে পরিচিত।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে কমলা হ্যারিস ঘোষণা করেন, টিম ওয়ালজ তার রানিংমেট হবেন।
সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে হ্যারিস বলেন, আমি গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমি টিম ওয়ালজকে আমার রানিংমেট হতে বলেছি। গভর্নর, প্রশিক্ষক, শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওয়ার্কিং ফ্যামিলির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে আমার টিমে পাওয়া খুবই বড় ব্যাপার।
তার ওই পোস্টের পর টিম ওয়ালজও একটি পোস্ট করেন। তিনি লিখেছেন, আমার কাছে এটা খুব সম্মানের। আমি রাজি। ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস দেখিয়ে দিচ্ছেন রাজনীতিতে কী করা সম্ভব। এটা আমাকে স্কুলের প্রথম দিনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
মিনেসোটাকে সুইং স্টেট বলা হয় না। গত ১২ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই অঙ্গরাজ্য ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়ে আসছে। টিম ওয়ালজের গুরুত্ব হলো মিনেসোটার বাইরে অন্য রাজ্যে ভোটদাতাদের মধ্যেও তার প্রভাব আছে, বিশেষ করে গ্রামের দিকে।
হাইস্কুল শেষ করে ওয়ালজ ন্যাশনাল গার্ডে নাম লেখান এবং ২৪ বছর সেখানে ছিলেন। তিনি স্কুল শিক্ষকও ছিলেন। যুক্তরাজ্যের দুইটি রাজ্যে তিনি শিক্ষকতা করেন। তিনি সেখানে হাইস্কুলের ফুটবল দলের কোচ ছিলেন।
ওয়াশিংটনের আমেরিকান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ফিলিপো ট্রেভিসন ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, তিনি জাতীয় স্তরে খুব যে পরিচিত তা নয়, কিন্তু তার এই অভিজ্ঞতার কারণে তিনি খুব বিশ্বাসযোগ্যভাবে ভোটারদের একটা অংশের কাছে সহজে পৌঁছাতে পারবেন।
ট্রেভিসন মনে করেন, হ্যারিস যে ওয়ালজকে বেছে নিয়েছেন, তার কারণ তিনি গ্রামের ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে চান। তিনি জানিয়েছেন, ‘ট্রাম্প ও তার রানিংমেট ভান্স মধ্যবিত্তদের সম্পর্কে বেশি জানেন না। কিন্তু ওয়ালজ মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ।
২০০৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ওয়ালজ মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য ছিলেন এবং কমিটি অব ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্সের সদস্য ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি মিনেসোটার গভর্নর নির্বাচনে জিতে যান। গভর্নর থাকার সময় তিনি বেশ কিছু প্রগতিশীল পদক্ষেপ নেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো গর্ভপাতের অধিকার, বিনোদনের জন্য মারিজুয়ানাকে আইনসঙ্গত করা এবং বাচ্চাদের স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা।
ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হিসাবে তার নাম যখন তালিকায় রাখেন হ্যারিস, তখন অনেক মিডিয়াই তাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি। তার গ্রামের পশ্চাদপট ও সকলের কাছে তার আবেদন কতটা তা নিয়ে কিছুটা আলোচনা হয়েছিল।
কিন্তু তিনি দ্রুতই প্রচারের আলোয় আসেন। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘অদ্ভুত’ বলে উল্লেখ করেন। এই কথাটা ভাইরাল হয়ে যায়। হ্যারিসও তার প্রচারে তা ব্যবহার করতে শুরু করেন। তার প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও সামাজিক মিডিয়ার পোস্টে এটা ব্যবহার করা হতে থাকে।