আত্মহত্যা করেছেন বলিউড অভিনেত্রী মালাইকা অরোরার বাবা। গতকাল বুধবার সকালে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দেন তিনি। বাবার আত্মহত্যার কথা শুনে পুনে থেকে দ্রুত সেখানে পৌঁছান অভিনেত্রী। শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে আছেন কথিত প্রেমিক অর্জুন কাপুর, সাবেক স্বামী আরবাজ খান ও তার বাড়ির লোকজন। জানা গেছে, মা-বাবার বিচ্ছেদের প্রভাব পড়েছিল মালাইকার ওপরে।
মালাইকার বাবা অনিল মেহতা মার্চেন্ট নেভিতে চাকরি করতেন। জন্মেছিলেন হিন্দু পাঞ্জাবি পরিবারে। ভারতের সীমান্তে ফজিলকায় তাদের আদি বাড়ি। খ্রিষ্টান মালায়লি পরিবারের মেয়ে জয়েস পলিক্র্যাপকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। মালাইকার ১১ বছর বয়সে দুজনার বিচ্ছেদ হয়। কেমন ছিল দুই ধর্মের দুজন মানুষের সংসার? তাদের বিচ্ছেদ কতটা প্রভাব ফেলেছিল মেয়ে মালাইকার শৈশবে। পুরোনো এক সাক্ষাৎকারে সেসব জানিয়েছিলেন মালাইকা।
শৈশবটা তেমন সুখকর ছিল না মালাইকার। বিশেষ করে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিল না। অল্প বয়সেই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন যে, বড় হয়ে দ্রুত নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। দাঁড়াতে হবে পরিবারের পাশে। ওই সাক্ষাৎকারে পরিবার নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘বাবা পাঞ্জাবি এবং মা খ্রিষ্টান, ফলে পরিবারে একটি ধর্মনিরপেক্ষ আবহ ছিল। মামাবাড়ির প্রতি টান ছিল বলে ক্যাথলিক ধর্ম বেশ লাগত। আমাকে ও আমার বোন অমৃতাকে ব্যাপ্টাইজড করাও হয়েছিল, আমরা ক্যাথলিক ধর্ম মানতে শুরু করলাম।’
তবে অল্প বয়সে মা-বাবার বিচ্ছেদ অনেকদিন পর্যন্ত তার কাছে ছিল আতঙ্কের। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর মায়ের সঙ্গেই থাকতেন দুবোন। সংসার চালাতে ভীষণ পরিশ্রম করতে হতো মাকে। মাকে দেখেই তার ভেতরে পরিশ্রম করার বীজ রোপিত হয়। তার দাবি, সেটা আজও রয়েছে।’
এমটিভিতে ভিডিও জকি (ভিজে) হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন মালাইকা, পরে মডেলিং। প্রতিষ্ঠিত মডেল হওয়ার কিছুদিন পর বলিউডে কাজ শুরু করেন। তার ছোট বোন অমৃতাও বলিউডের ছবিতে অভিনয় শুরু করেন। কিন্তু মালাইকার মতো জনপ্রিয়তা পাননি৷ একাধিক ছবি ফ্লপ করার পর ২০০৯ সালে বিয়ে করে ইন্ডাস্ট্রি ছাড়েন।
বাবাকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন দুই বোন৷ সামাজিক মাধ্যমে গভীর দুঃখের সঙ্গে একটি পোস্ট করে বাবাকে নিয়ে লিখেছেন তার কন্যা। ভারতীয় এক গণমাধ্যম লিখেছে, আত্মহত্যার আগে সকালের দিকে দুই মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন অনিল। অসুস্থ শরীর নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। মেয়েদের তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ, আমি ক্লান্ত।’ কোনো কোনো প্রতিবেদন বলছে, ধূমপান করতে ব্যালকনিতে গিয়েছিলেন অনিল। এরপর নিজের জীবন শেষ করার জন্য সাততলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন।