প্রতি বছরের মতো এবারও প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে মালয়েশিয়ায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। মালয়েশিয়ায় দিবসটিকে বলা হয় ‘মওলিদুর রাসুল’ অর্থাৎ নবীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন দেশটির মুসলিমরা।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে স্থানীয় সময় সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় পুত্রাজায়া আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
‘আল-ফালাহ পেমাকু মালয়েশিয়া মাদানি’ শীর্ষক এ সমাবেশে মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান ইব্রাহিম এবং মহামান্য রাণী রাজা জরিথ সোফিয়া অংশ নেন।প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী দাতিন সেরি ড. ওয়ান আজিজাহ ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মন্ত্রী (ধর্ম বিষয়ক) দাতুক ড. মোহাম্মদ নাঈম মোক্তারও সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে সমাজে ঐক্য গড়ে তুলতে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর পথ অনুসরণ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাজা সুলতান ইব্রাহিম। উপস্থিত হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইসলামি আইন এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মহৎ মূল্যবোধ ও আদর্শ মেনে চললে মালয়েশিয়া সত্যিকার অর্থে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাবে।
তিনি আরও বলেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে পারস্পরিক স্নেহ ও শ্রদ্ধা জাগ্রত করার ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) এর কর্মপদ্ধতি অনুকরণীয়। সব উম্মাহকে মহানবী (সা.) এর শিক্ষাকে সমুন্নত রাখতে হবে। যাতে মানবতার মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে দেশকে এমন একটি সম্প্রীতিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজে পরিণত করা যায়।
প্রধানমন্ত্রীর ধর্মবিষয়ক দফতরের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত সমাবেশ স্থলে হাজারো কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছিল নবীর দরুদ ও সালাম। এতে অংশ নেন বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী ১৩১টি দল। সব মিলে ৬ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় এদিন মসজিদ মাদরাসা ও স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও সমাবেশে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় মওলিদুর রাসুল পুরস্কার দেন রাজা সুলতান ইব্রাহিম।
পুত্রাজায়ার পাশাপাশি রাজ্য পর্যায়ে সারওয়াক, জোহর, মেলাকা, নেগেরি সেম্বিলান, তেরেঙ্গানু, পেরাক, কেদাহ, পাহাং, সেলাঙ্গর ও পেনাংয়েও ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত হয়েছে। এসব রাজ্যে নবীর স্মরণে সভা-সমাবেশও হয়েছে। যাতে অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ।
কুয়ালালামপুরের তুয়াঙ্কু মিজান মিলিটারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফিলিস্তিনি জনগণের সুস্থতা ও আরোগ্য লাভে এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।