মার্কিন শিক্ষা বিভাগ ভেঙে দেওয়ার নির্বাহী আদেশে সই করলেন ট্রাম্প

মার্কিন শিক্ষা বিভাগ (ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন) ভেঙে দিতে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এই আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প।

এই আদেশে ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের সহযোগী শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহনকে বিভাগটি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যা কংগ্রেসের মাধ্যেমে অনুমোদিত হতে হবে।

মূলত নির্বাচনের আগে এই ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ প্রচারণার পাশাপাশি প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মূলত শিক্ষা সংক্রান্ত ক্ষমতা অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় সরকারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিক্ষা বিভাগ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন। যদিও তার এই প্রচেষ্টা আদালতের চ্যালেঞ্জ ও সাংবিধানিক বাধার সম্মুখীন হতে পারে।

বৃহস্পতিবারের ওই অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের চারপাশে ডেস্কে শিশুদের অর্ধবৃত্তাকারভাবে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল ও তাদের প্রত্যেকের হাতে নির্বাহী আদেশের নিজস্ব সংস্করণ স্বাক্ষরের জন্য ছিল। ট্রাম্প যখন আদেশে স্বাক্ষর করার জন্য তার মার্কার খোলেন, তখন শিশুরাও তাকে অনুসরণ করে। যখন তিনি ক্যামেরার জন্য সম্পূর্ণ আদেশটি তুলে ধরেন, তখন বাচ্চারাও তাই করছিল।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে ট্রাম্প বলেছেন, আমি ফেডারেল শিক্ষা বিভাগকে একবারে নির্মূল করার জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবো। এটা অদ্ভুত শোনাচ্ছে, তাই না? শিক্ষা বিভাগ, আমরা এটি নির্মূল করতে যাচ্ছি এবং সবাই জানে এটি সঠিক। ডেমোক্র্যাটরাও জানে এটি সঠিক।

কিন্তু ডেমোক্র্যাট ও শিক্ষা সমর্থকরা বেশ দ্রুতই এই পদক্ষেপকে কেবল প্রেসিডেন্টের অতিরিক্ত ক্ষমতার আরেকটি উদাহরণ নয় বরং সারা দেশের শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করার প্রচেষ্টা হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন।

ট্রাম্পের ওই অনুষ্ঠানের কয়েক মিনিটের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সিনেট সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার লেখেন, শিক্ষা বিভাগ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ও বিপর্যয়কর পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি। এটি শিশুদের ক্ষতি করবে।

আল জাজিরা জানায়, ফেডারেল সরকারের মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা উদ্যোগকে একীভূত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের অধীনে শিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি করার মাধ্যমে সেসময় তিনি একটি নতুন মন্ত্রিসভা-স্তরের অবস্থান তৈরি করেন। তখনও রিপাবলিকানরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে এই পদক্ষেপ রাজ্য ও স্থানীয় স্কুল বোর্ডগুলোর ক্ষমতা কেড়ে নেবে।

  • Related Posts

    বাংলাদেশের ত্রাণ নিয়ে উদ্ধার ও চিকিৎসা দল মিয়ানমার পৌঁছালো

    মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ৫৫ সদস্যের একটি শক্তিশালী উদ্ধার ও চিকিৎসা দল মিয়ানমার পৌঁছেছে । মঙ্গলবার দুপুর ২টায় এই শক্তিশালী উদ্ধার ও চিকিৎসা দল…

    Continue reading
    সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়া

    বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এমনকি, তার এই মন্তব্যকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। গত মাসের শেষ…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    বাংলাদেশের ত্রাণ নিয়ে উদ্ধার ও চিকিৎসা দল মিয়ানমার পৌঁছালো

    বাংলাদেশের ত্রাণ নিয়ে উদ্ধার ও চিকিৎসা দল মিয়ানমার পৌঁছালো

    সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়া

    সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়া

    মালয়েশিয়ায় গ্যাসের পাইপলাইনে লিক থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আহত ৬৩

    মালয়েশিয়ায় গ্যাসের পাইপলাইনে লিক থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আহত ৬৩

    শিবচরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ঝরে গেলো ৪ প্রাণ

    শিবচরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ঝরে গেলো ৪ প্রাণ

    মেসির দেহরক্ষীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা

    মেসির দেহরক্ষীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা

    ‘মুজিব’ সিনেমার পর দীর্ঘ বিরতিতে এলো ফারিয়ার ‘জ্বীন’

    ‘মুজিব’ সিনেমার পর দীর্ঘ বিরতিতে এলো ফারিয়ার ‘জ্বীন’

    মিশরে ঈদুল ফিতর উদযাপন

    মিশরে ঈদুল ফিতর উদযাপন

    সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, সতর্ক সংকেত

    সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, সতর্ক সংকেত

    মাছ, মাংস, চিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কে ভারতের যেসব খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি

    মাছ, মাংস, চিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কে ভারতের যেসব খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি

    বান্দরবানে শতভাগ হোটেল-মোটেল বুকড, খালি নেই বাসের সিটও

    বান্দরবানে শতভাগ হোটেল-মোটেল বুকড, খালি নেই বাসের সিটও