দায়িত্বে অবহেলা এবং আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হেড কোচের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় চান্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। শুরুতে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও ৩ দিন পর সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছেন টাইগারদের সদ্য সাবেক হেড কোচ।
জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে চড় মারা এবং অনুমতি ছাড়া ছুটি নেয়ার অভিযোগে গত মঙ্গলবার হাথুরুসিংহেকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় বিসিবি। ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হলেও এই সময়ের মধ্যে কোনো উত্তর আসেনি হাথুরুর পক্ষ থেকে। ফলে গতকাল (১৭ অক্টোবর) বিসিবির এক মিটিংয়ে হাথুরুকে বরখাস্ত করে নতুন কোচের অনুমোদন দেয়া হয়।
বরখাস্ত হওয়ার একদিন পরে এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন হাথুরু। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বিসিবি কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের প্রসঙ্গে কথা বলতে এই চিঠিটি লিখছি। ২০২৩ বিশ্বকাপে এক খেলোয়াড়ের ওপর আক্রমণ এবং অনুমতি ছাড়া অতিরিক্ত ছুটি নেয়ার যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে করা হয়েছে সেটি আমার সততা এবং পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে এই অনুমানকে বাস্তব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে দিতে পারি না। আমি বিশ্বাস করি আমাকে ঘিরে হওয়া ঘটনাগুলোর ব্যাখ্যা দেয়া এবং আমার পাশের গল্প জানানো জরুরি।’
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ চলাকালে জাতীয় দলের এক ক্রিকেটারকে চড় মারার ভয়াবহ অভিযোগ আছে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। তবে ঘটনাটিকে বানোয়াট বলে উড়িয়ে দিয়েছেন হাথুরু। তার মতে, যদি ড্রেসিংরুমে বা ডাগআউটে এই ঘটনা ঘটে তাহলে মাঠের এত ক্যামেরায় সেটা ধরা পড়ল না কেন!
এ প্রসঙ্গে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘কথিত ঘটনাটি খেলোয়াড়দের ডাগআউট বা ড্রেসিং রুমে ঘটেছিল, এমন একটি জায়গা যা বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালীন সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে থাকে। সেখানে ৪০-৫০টি ক্যামেরা প্রতিটি মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করছে। আমি এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো অভিযোগকারী এবং সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি ঘটনাটি এতোটাই মারাত্মক হতো, তাহলে ঐ খেলোয়াড় কেন অবিলম্বে টিম ম্যানেজার বা কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে জানায়নি? আর যদি অভিযোগ করা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আমাকে কেন প্রশ্ন করা হয়নি বা এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয়নি। এটা খুবই আশ্চর্যজনক যে অভিযুক্ত ঘটনার কয়েক মাস পরে একজন ইউটিউবারের দ্বারা বিষয়টি সামনে আসে।’
নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত ছুটি কাটানোর বিষয়ে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘ছুটি নেয়ার বিষয়ে যে অভিযোগ সেটিও স্পষ্ট করতে চাই। যখনই আমি ব্যক্তিগত ছুটি নিয়েছি তখনই ক্রমাগতভাবে সিইও এবং ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি এবং পেয়েছি। কখনই বিসিবি আমাকে বলেনি তারা আমার ছুটির বিষয়ে অখুশি। উল্টো আমি যখনই ছুটি চেয়েছি, বিসিবি সেটা মেনে নিয়েছে। কখনোই আমি তাদের অনুমতি ছাড়া ছুটিতে যাইনি।’