ফেনীর সোনাগাজীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক খুরশিদ আলমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলে সংঘর্ষ।এতে কমপক্ষে উভয় গ্রুপের ৩০ জন আহত হন। দুপক্ষের দাবি অবশ্য ৯০ জন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই পক্ষকে ধাওয়া দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে সোনাগাজী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সেন্টুর অনুসারী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নুর আলম সোহাগের দাবি, তাদের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। আর খুরশিদ আলমের সমর্থকদের দাবি, তাদের ৪০ জন আহত হয়েছেন।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সাদেকুল করিম আরাফাত জানান, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।
তারা হলেন, সেন্টু পক্ষের আসিফুল ইসলাম, আবু ইউসুফ, নুর করিম, নুর আলম, ইব্রাহিম, এনায়েত হোসেন, ওমর হাসান জিসান, আবুল কাশেম, রাহাতুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, আবুল কালাম ও কামরুল হাসান।
খুরশিদ পক্ষের আহতরা হলেন, রফিকুল ইসলাম, রহমত উল্যাহ শাহিন, ওসমান গণি জিহাদ, নুর ইসলাম সম্রাট, জাহেদুল ইসলাম রুবেল, এবিএস মারুফ ও নুর আলম রিয়াদ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সেন্টুর এলাকায় হওয়ায় তারা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নেন।
জানা যায়, সোনাগাজী সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিরাজ ও রায়হানের ওপর ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে হামলা করায় বিএনপির একটি পক্ষ। প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে সোনাগাজী সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে সোনাগাজী জিরো পয়েন্টে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেন যুবদল নেতা খুরশিদ আলম ভূঞার সমর্থকরা।
সেই সমাবেশের প্রতিবাদে বুধবার সেন্টুর সমর্থকেরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিকেলে সোনাগাজী বাজারের পশ্চিম মাথায় গেলে খুরশিদের সমর্থকেরা মিছিলে হামলা করেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
সেনাবাহিনীর ফেনী ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর ফাহিম জানান, সেনাবাহিনী দুই পক্ষকে ধাওয়া দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় খুরশিদ আলমের সমর্থক ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের দাবি, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছাত্রদল নেতা নুর আলম সোহাগ, মেজবাহ উদ্দিন পিয়াস ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রদলের দুই নেতার ওপর হামলা করেন।
তিনি বলেন, আজকে ঘটনার জন্যও তারা দায়ী। উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নুর আলম সোহাগ ও সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এবং তাদের আশ্রয়ে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী জিসান, শুভ, ফাহিম, নিলয় ও হাসিবের নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিরাজ ও রায়হানের ওপর হামলা হয়েছে।