
আজ রোববার পর্তুগালে (১৮ মে) মধ্যবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শুক্রবার ১৬ মে প্রচার প্রচারণার শেষ দিন ছিল।
পর্তুগালের জাতীয় সংসদের সর্বমোট ২৩০টি সংসদীয় আসন রয়েছে এর মধ্যে রাজধানী লিসবন এরিয়াতে রয়েছে সর্বোচ্চ ৪৮ টি আসন এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বন্দরনগরী পর্তোতে ৪০, ব্রাগা ১৯, সেতুবাল ১৮, আভেইরো ১৬, লেরিয়া ১০, কুইমরা/ফারু/সান্তারাইতে ৯টি করে, ভিসেউ ৮ টি, মাদেইরা/ভিয়েনা ডো কাস্তেলো ৬টি করে, আজোরেস/ভিলা রিয়েল ৫টি করে, কাস্তেলো ব্রাংকো ৪, গোয়ারদা/বেজা/ব্রাগানসা/এবোরা ৩টি করে, পোরতালেগ্ৰে ২টি সংসদীয় আসন রয়েছে।
প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো দেশটির সর্বোচ্চ আসন স্বীকৃত প্রধান দুইটি শহরের ভোটারদের মন জয় করতে নানা ধরনের প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। দিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের আশ্বাস।
নির্বাচনে জরিপে প্রধান দুটি দল সোশ্যালিস্ট পার্টি এবং সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ে তাদের অবস্থান জানান দিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চালানোর জরিপে পুরো মে মাস ধরে প্রতিদিনই নির্বাচন জরিপের ফলাফল পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ মুহূর্তের প্রচার প্রচারণায় ক্ষমতাসীন সোশ্যালিস্ট পার্টি এগিয়ে রয়েছে, তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রোর কিছুটা জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচন নিয়ে সবাই তাকিয়ে আছে ফলাফলের দিকে। নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ধারিত হবে ১৮ হাজার ইমিগ্রেনের ভাগ্য।
বর্তমান এই ২০২৪ সালের নির্বাচনে ২৩টি রাজনৈতিক দল এবং স্বতন্ত্র একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অংশগ্রহণকারী প্রধান দলগুলো হচ্ছে সোশালিস্ট পর্টি (পিএস), সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট পার্টি(পিএসডি), ব্লক ইসকেরদা (বিই), সিডিইউ (২টি দলের জোট পিসিপি এবং পিইভি ), পিএএন, আইএল, সেগা, লিব্রে, সিডিএস-পিপি, এমপিটি, আরআইআর, ইরগূইতে, এমএএস, আলিয়ানসা, এডিএন।
এদিকে সরকার গঠন করার জন্য প্রয়োজনীয় ১১৬টি সংসদীয় আসন আদায় করা কোনো দলের পক্ষেই সম্ভব হবে না হিসেবে জরিপের ফলাফল এবং বিগত নির্বাচনের দৃশ্যপট থেকে প্রতীয়মান হয়েছে যেমন গত ২০১৯ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সোশ্যালিস্ট পার্টি ১০৮টি আসন অর্জন করতে পেরেছিল। আর ২০২৪ কেউ একক ভাবে সরকার গঠন করতে পারে নাই শরিক হয়ে দল গঠন করেছে।
সুতরাং চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার কারণে শরিক দল নিয়ে সরকার গঠন করেছিল বর্তমান ক্ষমতাসীনরা। অপরদিকে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট পার্টি গত ২০১৯ সালের নির্বাচনে আসন পেয়েছিলেন ৭৯টি, তবে গত ২০২১ -২০২৪ সালে মিউনিসিপ্যালিটি নির্বাচনে রাজধানীতে ও বিভিন্ন শহরে তাদের মনোনীত প্রার্থীর বিজয় ইঙ্গিত করছে জাতীয় নির্বাচনে তাদের আসন সংখ্যা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাবে এবং নির্বাচনী জরিপে বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে।
নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন পর্তুগিজ নাগরিকের সঙ্গে ও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি আলাপকালে দেখা যায় সোশ্যালিস্ট পার্টির সার্বিক সমর্থনে এগিয়ে রাখছেন তারা।
অন্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোশ্যালিস্ট পার্টির পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় প্রবাসী বাংলাদেশিরাও উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ ভারত উপমহাদেশের তথা সব অভিবাসীরা ক্ষমতাসীন সোশ্যালিস্ট পার্টির পক্ষে রায় দেবেন বলে জানিয়েছেন। কেননা এ সরকার গণমানুষের এবং অভিবাসীবান্ধব বলে তারা মতপ্রকাশ করেছেন বলেই সবাই মনে করেন আবার ক্ষমতায় আসা উচিত।
কার ভাগ্যে কি আছে রোববার ১৮ মে মধ্যরাতের পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যাবে কোন সরকার ক্ষমতায় আসছে। তবে সাধারণভাবে এ দেশের জনগণ মনে করছেন রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ এবং জনগণের রায়ে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা যেন এই মহামারি-উত্তর কঠিন সময়ে বিশ্ব অর্থনীতির সাথে তাল মিলিয়ে দেশটির উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে পারেন এবং সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার মানকে আরও উন্নত করতে সচেষ্ট হবেন এমনটাই মনে করেন পর্তুগিজ নাগরিকসহ পর্তুগালে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা।