
হাবিবুর রহমান মুন্না।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এসএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি বিষয়ে নকল সরবরাহের চেষ্টাকালে ইমরান হোসেন (১৯) নামের এক যুবককে হাতেনাতে আটক করে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ডাঃ যোবায়েদা হান্নান হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাফিদ খাঁন।
ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলাকালে পেরিয়া ইউনিয়নের ডাঃ যোবায়েদা হান্নান হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরিদর্শনে যান ম্যাজিস্ট্রেট রাফিদ খাঁন। এর আগে কেন্দ্রটির ট্যাগ অফিসার শহীদুল ইসলাম নিয়মিত পরিদর্শনের সময় লক্ষ্য করেন, এক যুবক পরীক্ষা কেন্দ্রে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছে। কিছু সময় পর ওই যুবক একটি লিখিত কাগজ (নকল) হাতে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে তা এক আত্মীয় পরীক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে।
তাৎক্ষণিকভাবে ট্যাগ অফিসার বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশকে জানান। পুলিশের সহযোগিতায় ইমরান হোসেনকে কেন্দ্রের তৃতীয় তলা থেকে আটক করা হয়। এরপর তাকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
আটকের পর ইমরান হোসেনকে গাড়িতে করে উপজেলা কার্যালয়ে নেওয়ার সময় পথে কিছু উত্তেজিত এলাকাবাসী গাড়ির গতিরোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং নিরাপদে তাকে উপজেলা কার্যালয়ে নিয়ে যান।
একই দিন জেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে নকল ও অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে মোট ১৫ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছে—দারুল আফসারুল উলূম কামিল মাদ্রাসার ৪ জন,ধাতিশ্বর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২ জন,
জোড্ডা আলিম মাদ্রাসার ৫ জন,জোড্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ জন।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাফিদ খাঁন বলেন, “পরীক্ষায় নকল সরবরাহের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার কারণে অভিযুক্ত যুবককে আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, পরীক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত থাকুক। প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে।”
তিনি আরও বলেন, “পরীক্ষার স্বচ্ছতা ও নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আসছে। কেউ নকলের আশ্রয় নিলে কিংবা সহায়তা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শিক্ষার মান উন্নয়নে এবং সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের এ ধরনের কঠোর অবস্থান এলাকাবাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছে। অভিভাবকরাও আশা করছেন, এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও সৎ পথে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করবে।