টেস্ট শুরুর আগেই কানপুরের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। বৃষ্টির চোখ রাঙানি ছিল। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা ছিল, শুক্রবার প্রথম দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা ৯০ শতাংশের বেশি। এবং বাস্তবে সেটাই হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর শুরু হওয়া প্রথম দিনের খেলা মধ্যাহ্ন ভোজের পর ম্যাচের ৩৫ ওভার যেতেই বন্ধ হয়েছে, তারপরে আর শুরু করা যায়নি। খেলা বন্ধ হওয়ার সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ১০৭ রান।
বৃষ্টি কানপুর টেস্টের সঙ্গে এমনভাবে লেপ্টে আছে যে, সবাই এই টেস্টের পরিণতি, চালচিত্র নিয়ে মাথা ঘামানোর চেয়ে আবহাওয়া মানে বৃষ্টি নিয়েই বেশি ভাবছেন।
এদিকে আজ শনিবার টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও আছে বৃষ্টির শঙ্কা। ৮০ ভাগ বৃষ্টির কথা বলা আছে আবহাওয়ার রিপোর্টে। আর রোববার তৃতীয় দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা ৫৯ ভাগ।
প্রথম দিন ৯০ ওভারের জায়গায় মাত্র ৩৫ ওভার খেলা হয়েছে। তার মানে ৫৫ ওভার খেলা হয়নি। প্রথম দিনের এক তৃতীয়াংশ খেলা হওয়ার পর শনিবার দ্বিতীয় দিনও যদি বৃষ্টির কারণে ঠিক একই অবস্থা থাকে, বৃষ্টির বাঁধায় দিনের বড় সময় যদি খেলা না হয়, তাহলে কানপুর টেস্টে ফল নিষ্পত্তির সম্ভাবনা যাবে অনেকটাই কমে।
অবশ্য সবটাই নির্ভর করবে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংয়ের ওপর। ইতিহাস জানাচ্ছে, এ সিরিজে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ২ বার ব্যাট করে একবার আড়াইশো রানও করতে পারেনি।
চেন্নাইতে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্তর দল অলআউট হয়েছে ১৪৯ রানে (৪৭.১ ওভারে)। আর দ্বিতীয় বার ৫১৫ রানের হিমালয় সমান টার্গেটের পিছু ধেয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ২৩৪ (৬২.১ ওভারে)।
কাজেই বৃষ্টি বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়ালেও বাংলাদেশ যদি প্রথম টেস্টের মতই দেড়শোর নিচে প্রথমবার আর পরের বার ২৩০‘র ঘরে অলআউট হয়, তাহলে বৃষ্টিতে দেড় দিন ধুয়ে মুছে ৩ দিন খেলা হলেও ম্যাচ বাঁচানো কঠিন।
কাজেই টাইগারদের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো, বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজেদের ব্যাটিংয়ে সবার আগে মনোযোগি হওয়া। প্রথম ইনিংসটাকে যতটা সম্ভব বড় করা।
শুক্রবার ৩৫ ওভার ব্যাটিং করতে গিয়ে ৩ উইকেট হারিয়েছে শান্তর দল। এই ধারা অব্যাহত থাকলে প্রথম ইনিংসের স্থায়িত্ব হতে পারে ১০৫ ওভার। যদি তাই হয়, তাহলে বাংলাদেশের স্কোর গিয়ে ঠেকতে পারে ৩০০‘তে। তখন টাইগারদের ফলোঅনে ফেলতে হলে রোহিত শর্মার দলের প্রথম ইনিংসে দরকার পড়বে ৫০০+ রানের।
কাজেই ম্যাচে থাকতে এবং লড়াই করতে হলে বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্যই থাকবে, প্রথম ইনিংসটাকে যত সম্ভব বড় করা। প্রথম ইনিংসে দেড়শোর আশপাশে মুখ থুবড়ে পড়লে ম্যাচ বাঁচানোর পথ যাবে রুদ্ধ হয়ে। তখন বাকি ৪ দিনে ৩ দিন খেলা হলেও ম্যাচ বাঁচানো খুব কঠিন হবে।