
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় তুরস্কে সোমবার (১ জুন) নতুন করে আলোচনায় বসেছে দুই দেশের প্রতিনিধিদল। যদিও দুই পক্ষের অবস্থানে স্পষ্ট বিভাজনের কারণে তাৎপর্যপূর্ণ কোনো অগ্রগতির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিয়োরহিই টিখিই জানিয়েছেন, দেশটির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ। তারা এরই মধ্যে ইস্তাম্বুল পৌঁছেছেন। রাশিয়ার পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেডিনস্কি। রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, তিনি রোববার সন্ধ্যায় তুরস্কে পৌঁছান।
তুরস্কের কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় আলোচনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ইউক্রেন জানায়, তারা মধ্যাহ্নেই আলোচনা শুরু করবে। সময় নিয়ে এ বিভ্রান্তি তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি।
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এবং দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরাও।
এদিকে আলোচনার মধ্যেও যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা দূরের পথ বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্টলাইনে সংঘর্ষ চলছেই। উভয় পক্ষই একে অপরের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
রোববার ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা দাবি করে, তাদের চালানো একটি ড্রোন হামলায় রাশিয়ার ভেতরে ৪০টির বেশি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। এর জবাবে রাশিয়া ইউক্রেনের অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার রাতভর তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী ইউক্রেনের ছোঁড়া ১৬২টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, রাশিয়ার ছোঁড়া ৮০টি ড্রোনের মধ্যে তারা ৫২টি ভূপাতিত করতে পেরেছে।
এছাড়া সোমবার সকালে ইউক্রেনের খারকিভ শহরের একটি আবাসিক এলাকায় দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। শহরের মেয়র ইগর তেরেখোভ জানান, একটি ক্ষেপণাস্ত্র একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের কাছাকাছি, আরেকটি একটি স্কুলের পাশের সড়কে আঘাত হানে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
দুই দেশের মধ্যে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এটি দ্বিতীয়বারের মতো সরাসরি বৈঠক। তবে উভয় পক্ষের অনড় অবস্থান এবং চলমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি এখনো কঠিন বলেই মনে হচ্ছে।