যশোরের শার্শায় টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে আমন ধান ও সবজি ক্ষেত। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন কৃষকরা। এছাড়া বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাটবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। উপজেলার পুটখালী, গোগা, কায়বা, ও বাগআঁচড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এমন ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে।
রুদ্রপুর গ্রামের সবজি চাষি আবদুর রশিদের চোখে মুখে এখন দুঃস্বপ্ন। কারণ তার প্রায় এক একরের সবজি ক্ষেত পানির নিচে। পানি সরে গেলেও কোনোভাবে রক্ষা করতে পারবেন না এ ফসল। এরই মধ্যে ক্ষেতের সবজি গাছ মরা শুরু করেছে। চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা।
আব্দুর রশিদ বলেন, একমাস পর সবজি বাজারে তোলার স্বপ্ন দেখছিলাম। কিন্তু এখন সেই স্বপ্ন পানির তলায় ডুবে গেছে। লাভের বদলে উল্টো লোকসানে পড়ে গেলাম।
কায়বা এলাকার কৃষক আল-আমীন ৩৬ শতাংশ জমিতে বরইয়ের চারা লাগিয়েছেন। এবার বরই বিক্রি করে লাভের স্বপ্ন দেখেছিলেন। টানা বর্ষায় পানি জমে যাওয়ায় গাছগুলো নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। কিছু গাছ পানির নিচে ভেঙে পড়েছে।
গোগা এলাকার কৃষক মাষ্টার রওশন আলী তিন বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। পুরো ক্ষেতের কাঁচা ধান এখন পানিতে ভাসছে। এক তৃতীয়াংশ ধানও পাবেন না তিনি।
কৃষক সেলিম রেজা বলেন, সবেমাত্র ধানের শিষ বের হয়েছে। একটু রোদ হলেই ধান পাক ধরার কথা। এরই মধ্যে বৃষ্টির পানিতে ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
বাগআঁচড়া গ্রামের নাজমুল মোল্লা বলেন, টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়ে বাড়ির ভেতর পানি ঢুকে হাঁটুসমান হয়েছে। তলিয়ে গেছে বাগআঁচড়া দারুল আমান ট্রাস্ট এলাকা।
নাভারন কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী আশরাফুল জানান, বাজারে পানি ঢুকে যাওয়ায় ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মালামাল আনা-নেওয়া করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তারা।
শার্শা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা জানান, উপজেলার পুটখালী, গোগা ও কায়বা ইউনিয়নের বিল এলাকার ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। আমন ক্ষেত ও সবজি ক্ষেতে পানি জমে আছে। পানি দ্রুত নেমে গেলে ধানসহ ফসলের ক্ষতি কম হবে।
তিনি আরও জানান, উপজেলায় প্রায় ৩০০ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এ বৃষ্টির পানির সঙ্গে ভারতের পানি যাতে ঢুকতে না পারে সে বিষয়ে আমরা কায়বা ইউনিয়নের রুদ্রপুরে ইছামতী নদীর সামনে একটি বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকানোর চেষ্টায় আছি।