
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের চার বছর পূর্তির একদিন আগে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ খবর জানানো হয়েছে।
২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি জনগণের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করেছিল দেশটির সেনাবাহিনী। শনিবার যার চার বছর পূর্তি হতে চলেছে।
তবে সেনার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে কার্যত গৃহযুদ্ধ চলছে। বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাদের নিজ নিজ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার জন্য জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
চলতি বছর একটি নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে জান্তা কর্তৃপক্ষ। যা চলতি বছরের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সামরিক সরকার এখনো নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। বিরোধীরা একে জেনারেলদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপকৌশল হিসেবে দেখছে।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এমআরটিভি তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি জানায়। তাতে বলা হয়, ‘সফলভাবে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য এখনো স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এখনো অনেক কাজ বাকি।’
বিরোধীরা এই নির্বাচনকে ‘ভণ্ডামি’ অভিহিত করে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, যে এটি জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হবে। তারা সামরিক শাসনের বিরোধিতাকারীরা নির্বাচন আটকানোর পরিকল্পনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া বলছে, সামরিক বাহিনীর দমনপীড়নের ফলে একটি যুব-নেতৃত্বাধীন গণবিক্ষোভ সশস্ত্র প্রতিরোধে রূপ নিয়েছে, যা বর্তমানে মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে গৃহযুদ্ধের আকার নিয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাতে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে ও দেশটি চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়েছে। বর্তমানে দেশটির মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ এখন মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।