আশুলিয়ায় পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে হয়েছে। এতে অন্তত তিন জন নারীশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে নরসিংহপুর এলাকায় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশের দাবি, সংঘর্ষে গুলির কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে চারজন আহত নারীশ্রমিক ভর্তি আছেন। তারা হলেন—হালিমা খাতুন, ববিতা আক্তার, মোর্শেদা খাতুন ও চম্পা খাতুন।
হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক এইচ এম আসাফ উদ্দৌলা রিজভী কর্তব্যরত চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বলেন, ‘মোট চারজনকে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আহতদের মধ্যে চম্পা খাতুন ছাড়া বাকি সবাইকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে হালিমা খাতুন সুসুকা গার্মেন্টসের শ্রমিক। বাকিরা জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের।’
পুলিশ বলছে, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে নরসিংহপুর এলাকার জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা আন্দোলন করছিলেন। আজ সকালে এই কারখানার শ্রমিকরা নরসিংহপুরের সিনসিন মোড় এলাকায় জড়ো হয়ে অন্যান্য কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, ‘কোনো গুলির ঘটনা ঘটেনি। শ্রমিকরা যখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে তখন সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, যেটা হতে পারে—সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হলে সেটা যেখানে পড়ে, সেখানে ইটের কণা বা টুকরো থাকলে তা ছিটকে গিয়ে স্প্লিন্টারের মতো আঘাত করতে পারে। হয়তো তেমন কোনো টুকরো কারও হাতে বা কোথাও লেগেছে, যেটাকে গুলি বলা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেডের একাধিক শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, গত দুইদিন বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল মোড় অবরোধ করা হয়েছিল। গতকাল বিকালে পুলিশ শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর আজ সকালে শ্রমিকরা প্রথমে কারখানার সামনে অবস্থান নেন। সেখান থেকে তারা নরসিংহপুরের দিকে যাচ্ছিলেন।
এ সময় আশেপাশের আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে যোগ দেন। বাংলাবাজার এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে গুলি করার পাশাপাশি রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।